খোলাখুলি: শহরে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ নিষিদ্ধ। তাতে পরোয়া না করেই শিলিগুড়ির নানা বাজারে ব্যবহার হচ্ছে নিষিদ্ধ ক্যারিব্যাগ। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের দূষণ নিয়ে সচেতন করতে একাধিক অনুষ্ঠান নেওয়া হয়েছে। মাঝমধ্যেই প্রশাসনের তরফ থেকে অভিযান চালানো হয়, প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করতে দেখলে জরিমানাও করে প্রশাসন। তবুও বন্ধ হচ্ছে না প্লাস্টিকের ব্যবহার। পাশাপাশি পুরোদমে ব্যবহার করা হচ্ছে থার্মোকলের নানা জিনিসও।
স্থানীয়দের একটা বড় অংশের দাবি, শুধুমাত্র সচেতনতা প্রক্রিয়া চালিয়ে বা বাজারে অভিযান করে প্লাস্টিক ব্যবহার রোখা যাবে না। শিলিগুড়ি বা তার কাছাকাছি থাকা প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ তৈরির কারখানাও বন্ধ করতে হবে বলে তাঁদের দাবি। যদিও আরও কিছু বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের দাবি, শিলিগুড়িতে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ তৈরির কোনও কারখানা নেই, চোরাপথে ভিন্রাজ্য থেকে ঢুকছে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ। এখনও শিলিগুড়ির বিভিন্ন বাজারে দেদার থার্মোকলের থালা, বাটি, গ্লাস বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পরিবেশপ্রেমী সংগঠনগুলোও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের মধ্যেই তৈরি খাবার নিয়ে যাচ্ছেন যা স্বাস্থ্যের পক্ষেও বিপজ্জনক বলে চিকিৎসকদের মত।
শিলিগুড়ি শহরে যে কোনও ধরনের প্লাস্টিকের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন থেকে শুরু করে শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য, রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবকেও বিভিন্ন সময়ে সরব হতে দেখা যায়। শিলিগুড়ির বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন শিলিগুড়িতে অন্তত ৩০ হাজার ক্যারিব্যগের প্রয়োজন হয়। সাধারণত খুচরো ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের চাহিদা বেশি থাকে। মূলত কম দাম ও পরিবহণ খরচ কম হওয়ার কারণে খুচরো ব্যবসায়ীরা এসব ব্যবহার করেন। অনেক বড় দোকানে পরিবেশ বান্ধব ক্যারিব্যাগ দেওয়া হয়, তার জন্য দামও নিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু ছোট দোকানে দাম দিয়ে ওই ব্যাগ অধিকাংশ ক্রেতা নিতে চান না বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
গত মাসে শিলিগুড়ির একটি অতিথি আবাসে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন বাজারে খুচরো ব্যবসায়ীদের মধ্যে ১লক্ষ পরিবেশ বান্ধব ব্যাগ বিনে পয়সায় বিতরণের আশ্বাস দেন। ওই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী গৌতম দেব ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্তত ১০ লক্ষ পরিবেশ বান্ধব ব্যাগ দেওয়ার অনুরোধ করেন। মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘সবার মধ্যে এই ধরনের ব্যাগ ব্যবহারের অভ্যেস তৈরি হোক।’’ যদিও প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের বদলে ব্যবহৃত সিন্থেটিক ব্যাগ কতটা পরিবেশ বান্ধব সে নিয়েও সন্দেহ রয়েছে পরিবেশ কর্মীদের।
শিলিগুড়ির পরিবেশ প্রেমী সংগঠন ‘ন্যাফ’-এর কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘কম খরচে যাতে কাপড় বা চটের ব্যাগ খুচরো ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করতে পারেন সেব্যাপারে পুরসভার কাছে আবেদন রেখেছি।’’ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের উত্তরবঙ্গের আঞ্চলিক অধিকর্তা গৌতম পাল বলেন, ‘‘যে সমস্ত ব্যাগ একবারের জন্য ব্যবহার হয় তা বন্ধের উপরেই জোর দিচ্ছি। পুরসভাকেও উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে।’’ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ রুখতে কাগজের ঠোঙা বা কাপড়ের ব্যাগের কথা ভাবছেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভায় যত মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে তাঁরা এসব বানালে তাঁদেরও রোজগার হবে। জোগানও থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy