সহকারি ম্যানেজারকে নিগ্রহ ও অফিসে ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে চা বাগান বন্ধ করে দিলেন কর্তৃপক্ষ। ডুয়ার্সের মেটেলি থানার সামসিং চা বাগান থেকে সোমবার গভীর রাতে বেরিয়ে যান মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরা। মঙ্গলবার প্রশাসনিক ও চা বাগান মালিকানা সংস্থার দফতরে বাগান বন্ধের বিস্তারিত কারণ জানিয়ে বাগান বন্ধের নোটিশও পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সোমবার রাতেই মেটেলি থানায় চারজন বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও দায়ের করে মালিকপক্ষ।
অভিযুক্ত চার জনই তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন তরাই ডুয়ার্স প্ল্যানটেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সক্রিয় সদস্য হওয়ায় গোটা ঘটনায় অস্বস্তিতে শাসক দল। বাগানের ম্যানেজার জয়ন্ত বিশ্বাস তৃণমূলের সংগঠনের নাম না করে এ দিন বলেন, ‘‘বাগানের ইয়ংটং ডিভিশনে একটিই মাত্র চা শ্রমিক সংগঠন রয়েছে। যাঁরা অফিসে এসে গোলমাল করেছেন তাঁরা সেই সংগঠনের সঙ্গেই সক্রিয়ভাবে যুক্ত। তাই আমরা ওই সংগঠনটির থেকেই নিরাপত্তার আশ্বাস পেলেই বাগান ফের খোলার কথা বিবেচনা করব।’’
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার বিকেলে। বাগানে বসবাসকারী অশ্রমিক পরিবারের সদস্যদের কেন অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে না তা নিয়ে তিন জন স্থায়ী শ্রমিক ও একজন অশ্রমিক বাগানের অফিসে এসে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বাগান অফিসের টেবিলের ওপর থেকে কাগজপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়া হয়। অফিসের জানালার কাঁচ ঘুসি মেরে ভাঙতে গিয়ে পনম ভুজেল নামের এক বিক্ষোভকারীও রক্তাক্ত হয়ে পড়েন। বাগানের দুই সহকারি ম্যানেজার প্রদীপ বিশ্বকর্মা এবং দীপক বান্দাকে শারীরিক নিগ্রহ করারও অভিযোগ ওঠে। এরপরেই বাগানের ম্যানেজার জয়ন্ত বিশ্বাস মেটেলি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। জখম শ্রমিককে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাতেই নিরাপত্তার অভাবের কারণ জানিয়ে বাগান ছাড়েন মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরা।
এমন অভিযোগের পরে পরিস্থিতি সামলাতে দ্রুত তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্ব প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। নাগরাকাটার বিধায়ক তথা তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা শুক্রা মুন্ডার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল মালবাজারের মহকুমাশাসক জ্যোতির্ময় তাঁতির সঙ্গে দেখা করেন। এবং অফিসে এসে নিগ্রহের ঘটনার নিন্দা করে দোষীদের বিরু্দ্ধে পুলিশ আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি নকুল সোনার, সোনা সরকারেরা বলেন, ‘‘মালিকপক্ষের যে কোনই নিরাপত্তার অভাব বোধ হবে না সেই দাবি করেই বাগান দ্রুত খুলে দেওয়া হোক আমরা সেটাই চাইছি।’’ বাগান খুলতে বৈঠকও ডাকা হবে বলে জানান মালবাজারের মহকুমাশাসক জ্যোতির্ময় তাঁতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy