ব্যস্ত: আলিপুরদুয়ারে মাঝেরডাবরি চা বাগানে হচ্ছে কাজ। নিজস্ব চিত্র
বাম-আমলে ধর্মঘটে খাঁ খাঁ চা বাগানের ছবি এখনও মনে আছে ডুয়ার্সের বাসিন্দাদের। তাঁরা ভোলেননি বন্ধের সমর্থনে শ্রমিকদের মিছিলদের ছবিও। চা বলয়ে বামেদের ঘাঁটি দুর্বল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে সে ছবি বদলেছে। তারই প্রমাণ মিলল মঙ্গলবারে বামেদের ডাকা ধর্মঘটের প্রথম দিনেও। ডুয়ার্সের চা-বাগান জুড়েই দেখা গেল কার্যত স্বাভাবিক দিনের ছবি।
কাজে যোগ দিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই এসেছিলেন শ্রমিকেরা। শীতের শুষ্ক সময় চা বাগানে উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। গাছের কলম কাটা ও সেচের কাজের মত সামান্য কিছুদিনের কাজ শেষে সমস্ত বাগানে শ্রমিকদের অর্ধদিবস কাজ চলে। তারপর একমাস দীর্ঘ ছুটি দেওয়া হয়। যাকে চা বাগানের ভাষায় সাল ছুটি বলে। মঙ্গলবার ধর্মঘট উপেক্ষা করে কাজ করে চলা মালবাজার শহরের উপকণ্ঠে রাজা চা বাগানের শ্রমিক অনিতা ওঁরাও বলেন, “সামনেই তো লম্বা ছুটি। এ বারে তাই বন্ধ করে আর মজুরি কাটাতে আমরা রাজি নই।” ওয়াশাবাড়ি চা বাগানের শ্রমিক আনজান লেপচা বলেন, “বন্ধ করে আগেও যা দাবি করেছি তা পাই নি। তাই এখন আর বন্ধের পথে আমরা নেই।”
তৃণমূল এবং বিজেপি দুই শিবিরই চা বাগানে যে কোনও বন্ধই হয়নি তা দাবি করেছে। এই সময় বন্ধ হলেও বাগানে তেমন বিশেষ কোনও প্রভাব পড়ে না বলে জানিয়েছেন টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার ডুয়ার্স শাখার কর্মকর্তারাও। বাম শিবিরও এই দাবি উড়িয়ে দিতে পারেননি। সিটুর জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক জিয়াউল আলম বলেন, “অনেক চা বাগানে যে আংশিক কাজ হয়েছে তা আমরাও জানি। তারপরেও হলদিবাড়ি এবং কুর্তির মত বাগানে পুরোপুরি বন্ধ হয়েছে।”
জলপাইগুড়ির নানা জায়গাতে বন্ধের বিক্ষিপ্ত প্রভাব পড়েছে। ধূপগুড়িতে এ দিন সকালের দিকে রাস্তার উপর ধান ফেলে বিক্ষোভ দেখান বন্ধ সমর্থকেরা। পরে পুলিশ ধূপগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক মমতা রায়-সহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে। ব্যক্তিগত জামিনে ধৃতদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। ময়নাগুড়ি-ধূপগুড়িতে বেসরকারি বাস পথে কম দেখা গিয়েছে। তবে সরকারি বাস চলাচল ছিল স্বাভাবিক। যাত্রীদের সংখ্যাও অন্যান্য দিনের তুলনায় এ দিন বেশি ছিল বলে দাবি সরকারি বাস সংস্থার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy