বিনয় তামাং।—ফাইল চিত্র।
গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) হাতে আইন তৈরি ও প্রয়োগের ক্ষমতা ও আরও প্রশাসনিক কর্তৃত্বের দাবিকে হাতিয়ার করে আগামীতে সব ভোটে লড়বেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিনয় তামাং শিবির। শুক্রবার শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে সুকনায় দলের দু’দিনের চিন্তন শিবিরের শেষে এ কথা জানানো হয়েছে।
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি তথা জিটিএ-র ‘কেয়ারটেকার’ চেয়ারম্যান বিনয় তামাং বলেন, ‘‘জিটিএ চুক্তিতে রয়েছে আইন তৈরি ও প্রয়োগ করার ক্ষমতা দেবে কেন্দ্র ও রাজ্য। কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ টানার ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রশাসনিক স্বাধীনতা থাকার কথাও রয়েছে। আগামী জিটিএ ভোটের পরে ওই বাড়তি ক্ষমতা, আরও স্বশাসন নিশ্চিত করতে কেন্দ্র ও রাজ্যের কাছে আর্জি জানাব। এতে পাহাড়ের উন্নতিতে গতি আসবে।’’
শুধু তাই নয়, মোর্চার সভাপতি এটাও জানান, আগামী লোকসভা ভোটের আগে গোর্খা জাতিসত্ত্বার বিকাশের যে সমস্যা রয়েছে, তার স্থায়ী সমাধানের জন্য কেন্দ্রের উপরে চাপ বাড়ানো হবে। তা হলে কি গোর্খাল্যান্ডের দাবির দিকেই ঝুঁকছেন তিনি? বিনয় বলেন, ‘‘গোর্খাল্যান্ডের দাবির চেয়েও জরুরি গোর্খা জাতিসত্ত্বার যাবতীয় সমস্যার সমাধানের উপায় খোঁজা।’’
এর পরেই তিনি জানান, আগামীতে লোকসভা ও পরে জিটিএ ভোটে পাহাড়ে গত ৭-৮ মাসে কতটা উন্নয়ন হয়েছে, পাহাড়ের রাজনৈতিক পরিবেশ কতটা ভাল হয়েছে, সেটাও তুলে ধরবেন তাঁরা।
বিনয় বলেন, ‘‘আমরা কয়েক মাসে পাহাড়ে কী কাজ করেছি, কাদের জন্য করেছি, সেটা তুলে ধরা হবে। কারা আমাদের গালাগালি দিল, ফেসবুকে, হোয়াটসঅ্যাপে কী পোস্ট করল—তা নিয়ে ভাবতে আমরা কেউই রাজি নই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা পাহাড়-সহ গোটা উত্তরবঙ্গে গালাগালের রাজনীতির পরিবেশ চাই না। আমরা চাই সব দলের আলাদা নীতি-আদর্শ থাকলেও বিদ্বেষমূলক মনোভাব ত্যাগ করতে হবে সকলকেই। সেটা আমরা করে দেখানোর চেষ্টা করছি।’’
মোর্চা সূত্রের খবর, চিন্তন শিবিরে আসন্ন লোকসভা ভোটে কে প্রার্থী হতে পারেন, তা নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে একটা সময়ে বিনয়ের নামও ওঠে বলে দল সূত্রের খবর। সেই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে লোকসভা ভোটে দাঁড়ানোর কথা উড়িয়ে দেননি বিনয়। তিনি বলেন, ‘‘চিন্তন শিবিরে লোকসভা ভোটে আমাদের কী করণীয়, তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আমরা যে বিজেপিকে সমর্থন করব না, সেই ব্যাপারে ফের সকলে একমত হয়েছি। তবে নিজে ভোটে দাঁড়ানোর বিষয়ে বলার সময় এখনও আসেনি। ভোটের প্রক্রিয়া আগে শুরু হোক। যথাসময়ে সবকিছুই জানিয়ে দেব।’’
ঘটনাচক্রে, মাস ছয়েক আগেও মোর্চার সভাপতি লোকসভায় প্রার্থী হওয়ার প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন, একটা চমক দেওয়া হবে। লোকসভা ভোটের বেশি দেরি নেই। এখনও কিন্তু সেই রহস্যই জিইয়ে রাখলেন তিনি।
দার্জিলিং কেন্দ্রে কে প্রার্থী হবে তা নিয়ে বিজেপি, তৃণমূল শিবিরেও নানা আলোচনা চলছে। সুপ্রিম কোর্টে মামলায় নতুন কোনও রায় হলে পাহাড়ে বিজেপিকে শক্ত লড়াই দিতে বিমলকে ফের আসরে নামাতে চাইবে। তাই বিনয়কে সামনে চান তাঁর শিবিরের অনেকেই।
কিন্তু, তৃণমূলের সমর্থনে পাহাড়ে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ালে বিমল গুরুং শিবিরকে সামনে রেখে বিজেপি বাড়তি সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে বলে বিনয় অনুগামীদের একাংশের মত। তাই সূত্রের খবর, ভোট প্রক্রিয়া শুরু না হওয়া অবধি কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে না বিনয়-শিবির।
বিজেপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি মনোজ দেওয়ান বলেন, ‘‘যে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থনে আমরা দার্জিলিং লোকসভায় জিতেছিলাম তা আলাদা। এখন যে মোর্চা নেতারা সমর্থন করবেন না বলছেন তাঁদের আমরাও চাই না। মোর্চার আসল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy