বিজেপির বাইক র্যালিতে তৃণমূলের হামলার অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়ির বোদাগঞ্জে। তৃণমূলের আক্রমণের হাত থেকে প্রাণ বাঁচাতে বিজেপির কর্মীরা বাইক রেখে জঙ্গলে ভিতরে পালিয়ে যান বলে দাবি কেন্দ্রীয় শাসক দলের স্থানীয় নেতা কর্মীদের। রবিবার দুপুরে রাজগঞ্জ এলাকা থেকে তাঁদের র্যালিটি বোদাগঞ্জে এলে তৃণমূলের কর্মী সহ স্থানীয় নেতারা আক্রমণ করে বলে অভিযোগ। এ দিনই জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের আরও একটি বিজেপি বাইক র্যালি বের হয়। যদিও র্যালিটি শহরের প্রবেশের আগেই পার্কের মোড় এলাকায় আটকে দেয় পুলিশ।
গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বিজেপি ‘বিজয় সংকল্প যাত্রা’টি রাজগঞ্জ থেকে কোতোয়ালি থানায় অন্তর্গত বোদাগঞ্জ এলাকায় হাজির হয়। অভিযোগ র্যালিটি বারোপাটিয়া নতুন বস গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রবেশ করলে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বাধা দেয়। শুরু হয় বচসা। অভিযোগ, এরপরেই বিজেপি কর্মীদের উপর চড়াও হন তৃণমূলের কর্মীরা। দু’পক্ষে গণ্ডগোলের জেরে বেশ কয়েক জন আহত হয়েছে।
বিজেপির দাবি, তাঁদের কর্মীদের উপরে হামলা চালালেও পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করেছে। তাঁদের কর্মীরা তৃণমূলের আক্রমণ থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাইক ছেড়ে পালিয়ে যান। যাঁরা পালাতে পারেননি তাঁদের উপরে বাঁশ, লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়। আহত হয় কম বেশি প্রায় ২৫ জন কর্মী। বেছে বেছে বিজেপি কর্মীদের বাইক ভাঙচুর ও দুটি বাইক জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিজেপি।
বেশ কিছু বাইক ও কয়েক জন বিজেপি কর্মী এখনও নিখোঁজ। একটি বড় গাড়ি ভেঙে ফেলা হয়। ঘটনার পরেই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও রাজগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ১৩ জন বিজেপি কর্মীকে। কেউ মাথায় আঘাত পেয়েছেন কেউ বা বুকে। আবার অনেকের হাত পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চার জন বিজেপি কর্মীকে শিলিগুড়ি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা হলেন ধ্রুব ভুজেল, অভিষেক রায়, রবিন রায়, মাধাই দাস। তাঁদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা উদ্বেগজনক বলে জানা গিয়েছে। এ দিকে সদর ব্লকের বেরুবাড়ি, অরবিন্দ, খড়িয়া, মণ্ডলঘাট সহ অন্যরা এলাকায় বাইক র্যালিতে সামিল হন বিজেপি নেতা কর্মীরা। র্যালির নেতৃত্ব দেন বিজেপি জেলা সভাপতি দেবাশিস চক্রবর্তী। পার্কের মোড়ে র্যাফ বাহিনী সহ অন্য পুলিশ আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
মণ্ডল ঘাট এলাকা থেকে শহরের প্রবেশ করার আগেই পার্কের মোড় এলাকায় বিজেপি নেতা কর্মীদের গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি কোন অনুমতি নেই র্যালি করার। তার মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। তাই বিজেপি কর্মীদের বাইক সহ থানায় আটক করে নিয়ে আসা হয়।
বিজেপি জেলা সভাপতি দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজ্যে গণতন্ত্র নেই আবার প্রমাণ হল। পুলিশ তৃণমূলের নির্দেশে কাজ করছে। বোদাগঞ্জে তৃণমূল আক্রমণ করে আমাদের কর্মীদের উপর। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে কয়েক জন। যারা আক্রমণ করল তাদের গ্রেফতার না করে আমাদের গ্রেফতার করল।’’
এ দিকে তৃণমূলের এসটি, এসসি ও ওবিসি সেলের জেলা চেয়ারম্যান তথা বারোপাটিয়ার নতুন বস গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কৃষ্ণ দাস বলেন, ‘‘আমাদের এলাকায় শিকারপুর, রাজগঞ্জ সহ অন্য জায়গা থেকে বিজেপি কর্মীরা গণ্ডগোল করতে বাইক র্যালি শুরু করেছিল। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। এই কারণে গ্রামের বাসিন্দারা এক হয়ে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। এরপরেও যদি এই ধরনের র্যালি করতে আসে সাধারণ মানুষই জবাব দিবে। তৃণমূলের কেউ তাদের উপর হামলা চালায়নি।’’
আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, ‘‘অনুমতি না বিজেপি বাইক র্যালি করে। আমরা বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy