Advertisement
০৮ মে ২০২৪

যে স্কুলে মুখ্যসচিব পড়তেন... 

জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া এই মোহিত নগর আর আর প্রাথমিক স্কুলের ছাত্র ছিলেন রাজ্যের বর্তমান মুখ্যসচিব মলয় দে-ও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বিল্টু সূত্রধর
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:২০
Share: Save:

পানীয় জল পাওয়া যায় না। স্কুলের দু’টি নলকূপই খারাপ। মাস ছ’য়েক ধরে। বেশ কয়েক দিন ধরে মাঠ পেরিয়ে পাশের স্কুল থেকে বালতিতে করে জল টেনেছেন শিক্ষকরা। কিন্তু এখন তা বন্ধ। তাই জল নেই বলে মাসখানেক ধরে স্কুলে মিড ডে মিলও বন্ধ। এমনই অবস্থা যে, শৌচাগারে গিয়েও জল পায় না ছাত্র-ছাত্রীরা। সেই জন্যই স্কুলে দিন দিন উপস্থিতির হারও কমছে বলে দাবি। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া এই মোহিত নগর আর আর প্রাথমিক স্কুলের ছাত্র ছিলেন রাজ্যের বর্তমান মুখ্যসচিব মলয় দে-ও।

স্কুলটির প্রতিষ্ঠা স্বাধীনতার দু’বছরের মধ্যে। এক সময় এলাকায় নাম করা স্কুলই ছিল। মোহিতনগরেই থাকতেন মলয়বাবুরা। এই স্কুলের পাশেই তাঁদের পৈতৃক বাড়ি।

কিন্তু এখন ক্রমশ গৌরব হারাচ্ছে সেই স্কুল। মোট ১২০ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে মঙ্গলবার ছিল জনা চল্লিশেক। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, একাধিকবার জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শকের দফতরে এবং বেশ কয়েকবার বিডিও অফিসে জানানো হয়েছে। তারপরেও নলকূপ মেরামত হয়নি। স্কুলের এক পড়ুয়ার অভিভাবকের কথায়, “এই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র এখন রাজ্য সরকারের মুখ্যসচিব। আরও অনেক কৃতী ছাত্রছাত্রী রয়েছে। স্কুলটি যে ভাল ছিল, তার প্রমাণ তো এটাই। তবু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।”

জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শিল্পা গৌরীসারিয়া বলেন, “মোহিতনগরের প্রাথমিক স্কুলে ছ’মাস ধরে জল নেই এ কথা জানা ছিল না। দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। এই সমস্যার কথা কোথায় জানানো হয়েছিল, তাও খোঁজ নেব।’’ সহকারী স্কুল পরিদর্শক যুথিকা সিংহ বলেন, ‘‘আমি ছুটিতে রয়েছি। এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারব না।’’

স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ৭। মঙ্গলবার মিড ডে মিলের সময় সামনের মাঠে বসে ছিল রূপালি, মেঘারা। তারা জানায়, সকালে একবার খেয়ে স্কুলে আসে। দুপুরে বেশ খিদে পেয়ে যায়। সে কথা শুনে মা-বাবারা অনেক পড়ুয়াকে ছুটির আগেই বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। মিড ডে মিল নেই দেখেই অনেকে সন্তানদের স্কুল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বলেও দাবি। স্কুলের এক শিক্ষক জানালেন, ‘‘তার উপরে জলের অভাবে শৌচাগারে যাওয়া যায় না। অসহনীয় অবস্থার মধ্যে রয়েছি আমরা।’’

প্রধান শিক্ষক দেবাশিস গুহ নিয়োগীর বক্তব্য, “আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করেছি। বেশ কিছু দিন পাশের হাইস্কুল থেকে বালতিতে জল টেনে নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু দিনের পর দিন কি তা সম্ভব? এই কারণে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারাও জল এনে মিড ডে মিল রান্না করতে চাইছেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Malay De Chief secretary School
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE