উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চ বাঁধার জন্য ডেকোরেটারদের ডেকে আনা হলেও, পরে কাজ থমকে যায়। তারপর প্রায় মাসদুয়েক কেটে গেলেও জলপাইগুড়িতে কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে কোনও সরকারি ঘোষণা নেই। সরকারি সূত্রের খবর, পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর।
রাজ্য সরকার এবং হাইকোর্ট প্রশাসন দু’তরফেই জলপাইগুড়িতে বেঞ্চের পরিকাঠামো তৈরি হওয়ার তথ্য এবং তা উদ্বোধনের প্রস্তাব কেন্দ্রের আইন মন্ত্রকে পাঠানো হয়েছে বলে খবর। এরপরে আইনমন্ত্রক থেকে রাষ্ট্রপতি ভবনে ফাইল পাঠিয়ে উদ্বোধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কথা। রাজ্যের দাবি, কেন্দ্রের তরফে বেঞ্চ নিয়ে কিছুই জানানো হয়নি। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনিকস্তরে একাধিক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বেঞ্চ উদ্বোধন হতে চলেছে ধরে নিয়ে বাতানুকুল যন্ত্র, টিভি নতুন করে কেনা হয়েছে। আসবাব, চামচ-প্লেটও কেনা হয়েছে। দীর্ঘ দিন তা ব্যবহার না হলে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে লোকসভা ভোটের আগে সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে কেন্দ্রের
বিরুদ্ধে জনমত তৈরির জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। জলপাইগুড়ির বার কাউন্সিলের সদস্য গৌতম দাস বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সার্কিট বেঞ্চের কাজ আটকে দিয়েছে।”
গত জুলাইয়ে উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক সভায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন ১৭ অগস্ট জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন হতে পারে। তারপরে মামলার জেরে তা পিছিয়ে যায়। এ দিকে গত অগস্টেই জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চের পরিকাঠামো সন্তোষজনক বলে জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ফুলবেঞ্চ সিদ্ধান্ত নেয় বলে সূত্রের খবর। তারপরে সেই বৈঠকের সিদ্ধান্তের প্রতিলিপি পাঠানো হয় দিল্লিতে। রাজ্য সরকারের একটি পক্ষের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে ‘গড়িমসি’ করছে। অন্যদিকে, আরেকপক্ষের যুক্তি, জলপাইগুড়িতে বেঞ্চের উদ্বোধন নিয়ে কেন্দ্র বেশ কয়েকটি প্রশ্ন করেছিল। যেমন প্রথমে উত্তরবঙ্গের সব জেলাকে জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের আওতায় রাখা হবে বলে রাজ্যের তরফে জানানো হলেও, পরে জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার নিয়ে বেঞ্চের কাজ হবে বলে রাজ্য জানায়। এই বদল কেন তা কেন্দ্র জানতে চেয়েছে। এছাড়া, বেশ কয়েক বছর আগে হাইকোর্ট জানিয়েছিল জলপাইগুড়িতে পরিকাঠামো যথেষ্ট নয়। তারপর পরিস্থিতির কী উন্নতি হয়েছে তাও জানতে চেয়েছে কেন্দ্র। আইনজীবীদের একটি অংশের দাবি, এই প্রশ্নগুলোর যথাযথ উত্তর না দেওয়া হলে সার্কিট বেঞ্চ তৈরিতে সমস্যা হতে পারে।
দিনকয়েক আগে জলপাইগুড়ি আইন কলেজে এসে ছাত্র-ছাত্রদের কাছে পুজোর পরে সার্কিট বেঞ্চের দাবিতে আন্দোলনে নামার আর্জি জানিয়েছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী। এ দিন সৌরভবাবু বলেন, “সার্কিট বেঞ্চ শুধু জলপাইগুড়িবাসী নয় গোটা উত্তরবঙ্গের আবেগ। এই
আবেগকে নিয়ে যাঁরাই রাজনীতি করে বাধা সৃষ্টি করবেন, তাঁদের হাত পুড়বেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy