দখলে: রিমোট নিয়েই এখন সন্ধ্যায় ‘লড়াইয়ের’ মেজাজ। নিজস্ব িচত্র
টিভিতে সিরিয়ালের সময়ই এ বার বিশ্বকাপ ফুটবল। আর তাতেই ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে গৃহযুদ্ধ।
সন্ধেবেলাতেই এ বার খেলতে নেমেছেন সুয়ারেজ, ক্যাভানি, রোনাল্ডো, মেসিরা। অথচ সেই সময়েই ঘরে ঘরে চলে একাধিক সিরিয়াল। কখনও কুসুমদোলা, কখনও রানি রাসমণি। আবার কেউ দেখতেন সন্ন্যাসী রাজা, কেউ অন্দরমহল। তাই টিভির দখল থাকে বাড়ির অনেক মহিলার হাতে। এতদিন তাতে কোনও আপত্তি ছিল না পুরুষদের। কেউ দেখতেন, কেউ বা দেখতেন না। কিন্তু রাত বাড়লে চ্যাম্পিয়নস লিগ, লা লিগা, প্রিমিয়ার লিগের সময় টিভির রিমোট চলে যেত তাঁদেরই হাতে। এ বার কী হবে?
এই বিবাদে শাশুড়ি-বৌমা জোট বেঁধেছেন শ্বশুর-বরের বিরুদ্ধে। কোনও বাড়িতে রিমোট নিয়ন্ত্রণে রাখতে দুই জায়ের মধ্যে সখ্য বেড়েছে, কোথাও আবার বাবা-ছেলে কিংবা বাবা-মেয়ে রিমোট হাতে রাখতে লড়ছেন মায়ের বিরুদ্ধে। অনেকেই অবশ্য সফল হননি। তাই হাল ছেড়ে খেলা দেখতে ক্লাব মুখো হচ্ছেন। খাগরাবাড়ির বাসিন্দা এক পুত্রবধূ সঙ্গীতা ও তার শাশুড়ি চায়না সরকারের এক সুর, “নতুন টিভি রাত ১১টা পর্যন্ত ছাড়ছি না।” সঙ্গীতার স্বামী ব্যবসায়ী রাহুলবাবু বলেন, “মা-বৌ এমন ফতোয়া দেবে আগে জানলে স্মার্ট টিভিটাই আনতাম না।”
দিনহাটার বাসিন্দা শিক্ষক শঙ্খনাদ আচার্যেরও প্রায় একই অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, “নতুন এলইডি টিভির ধারে কাছে যেতে পারছি না। পুরোনো টিভিই আমারও ভরসা।” রাহুলবাবু বা শঙ্খবাবুরা তবু পুরনো টিভিতে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন, কিন্তু যাদের বাড়িতে একটিই টিভি, তাদের অনেকের উদ্বোধনী ম্যাচ দেখারও সৌভাগ্য হয়নি। দিনহাটা স্টেশনের রেলকর্মী মৃদুল নন্দী বলেন, “মেয়ে ও আমি দুজনেই খেলা দেখার দলে। দুজনের চেষ্টাতেও স্ত্রীর কাছ থেকে রিমোট পাইনি। তাই উদ্বোধনী ম্যাচও দেখা হয়নি।” মৃদুলবাবুর স্ত্রী সংঘমিত্রা বলেন, “রাতের খাবারের আগে পর্যন্ত টিভির দখল ছাড়ার প্রশ্ন নেই।”
দিনহাটা ব্যায়াম বিদ্যালয়ের সচিব বিভুরঞ্জন সাহা ব্যায়াম বিদ্যালয়ের টিভিতেই বিশ্বকাপ দেখছেন। তবে কোচবিহারের বাসিন্দা আইনজীবী শিবেন রায় বলেন, “ছেলে আমি এক দলে। স্ত্রী তাই ছাড় দিতে বাধ্য হচ্ছে।” বাস্তবে সবার ভাগ্য এমন প্রসন্ন নয়। তারাও একসুরে গাইছেন, ‘সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি ফুটবল।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy