প্রতীকী ছবি।
বিষক্রিয়ায় অসুস্থ রোগী মঞ্জুর আলমকে ভর্তি করানো হয়েছিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু তাঁর বাড়ির লোকের দাবি, তাঁর যথাযথ চিকিৎসা হয়নি। পরিবারের লোকেরা সোমবার তাঁকে নার্সিংহোমে নিয়ে যান। রবিবার দুপুরের পরে তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল।
বর্ধমানের বাসিন্দা পলাশ নন্দী কর্মসূত্রে ময়নাগুড়িতে থাকেন। খিঁচুনি জ্বর নিয়ে সোমবার সকালে ভর্তি হন। তাঁর পাশে বসে দুশ্চিন্তায় বন্ধু সঞ্জয় পাল। তিনি বলেন, ‘‘কোনও সিনিয়র চিকিৎসক দেখে যাননি। কী করব বুঝতে পারছি না।’’
শনিবার শ্বাসকষ্ট এবং কিডনির সমস্যা নিয়ে আক্রান্ত বাবাকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি করিয়েছেন অঞ্জু বিশ্বাস। ওই দিন রোগীকে দেখেন জুনিয়র চিকিৎসকেরাই। রবিবার এক সিনিয়র চিকিৎসক দেখে গিয়েছেন। বাকি সব সময়ই জুনিয়র চিকিৎসকরাই ভরসা বলে জানান।
গত শনিবার থেকে সোমবার ইদের ছুটির দিন বস্তুত উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধিকাংশ বিভাগেই সিনিয়র চিকিৎসকদের অনেকেরই দেখা পাওয়া যায়নি বলে রোগীদের পরিবারের লোকজনের দাবি। তাঁদের দাবি, ভরসা বলতে জুনিয়র চিকিৎসকরাই। হাসপাতালের একটি সূত্রই জানিয়েছে, সোমবার ইদের ছুটির দিন অর্ধেক চিকিৎসকই ছিলেন না। রোগীদের অভিযোগ, রবিবার, সোমবার ছুটির দিনে সিনিয়র চিকিৎসকের দেখা মেলেনি শল্য বিভাগ, অর্থোপেডিক, চোখ এবং ইএনটি বিভাগে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের চিকিৎসা পরিষেবার এই হাল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার মৈত্রেয়ী কর বলেন, ‘‘এমন হওয়ার কথা হন। বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি। নির্দিষ্ট করে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’’ তাঁর কথায়, শনিবার অতিরিক্ত সময় রাউন্ড দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ইদে অফিস ছুটি থাকলেও চিকিৎসকদের ছুটির কোনও ব্যাপার নেই। রেসিডেন্সিয়াল মেডিক্যাল অফিসাররা ২৪ ঘন্টাই থাকবেন।
অথচ সোমবার তাঁদের অনেককেই দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। এমআরআই পরিষেবা বন্ধ হয়ে রয়েছে। সিটিস্ক্যান পরিষেবাও কোনও রকমে চলছে। দিনহাটার বাসিন্দা হৃদরোগে আক্রান্ত বিনয়চন্দ্র বর্মনকে রবিবার রাতে ভর্তি করিয়েছিলেন পরিবারের লোকেরা। তাঁর দাদা ব্রজকান্ত বর্মনের অভিযোগ, সুপারের দফতরে বারবার অনুরোধ করেছি। তবু রবিবার বিকেল পর্যন্ত কোনও সিনিয়র চিকিৎসক আসেননি। বাইরে থেকে সিটিস্ক্যান করানো হয়েছে। অথচ চিকিৎসা পরিষেবা মিলছে না। অঞ্জু বিশ্বাস বলেন, ‘‘সব সময়ই জুনিয়র চিকিৎসকরাই দেখছে। রোগীর পরিস্থিতি অবনতি হলে অনেক সময়ই তারা সামলাতে পারেন না। তা ছাড়া তাঁরা শিখছেন। পুরোটাই তাদের উপর ছেড়ে দিলে কী করে হবে? আমরা দুশ্চিন্তায় রয়েছি।’’ তাঁর ক্ষোভ, বহু গরিব বাসিন্দা হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবার উপর নির্ভর করেন। এমন হলে তাঁরা পরিবারের লোকদের নিয়ে বিপদে পড়বেন। ক্রান্তির বাসিন্দা মিঠুন সাহা জানান, অভিজ্ঞ সিনিয়র চিকিৎসক দেখছেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy