Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Coronavirus

করোনা নয়, মৃতার পরিজনেরাও নিশ্চিন্ত

এ কথা জানার পরেই গ্রামে তাঁর পরিবার এবং স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। তবে সোয়াব পরীক্ষার রিপোর্ট মেলার পর শনিবার সকালে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মৃত মহিলা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২০ ০৪:০৩
Share: Save:

সহযোগিতায়

• জলপাইগুড়ি কন্ট্রোল রুম: ০৩৫৬১২৩০২৫৫
• শিলিগুড়ি কন্ট্রোল রুম: ৭০০১৫০৯৯২৪, ০৩৫৩-২৪৩৫২৮২

• কোচবিহার কন্ট্রোল রুম: ৯০০২২৬৩৩৩৩

• আলিপুরদুয়ার কন্ট্রোল রুম: ৮২৫০৪৭৩২৮৩

হাঁফ ছাড়ল মুরলিগছ। শিলিগুড়ির বিধাননগরের ওই এলাকার বাসিন্দা এক মহিলা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেসপিরেটরি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে মারা যান শুক্রবার সকালে। তাঁর করোনা হতে পারে বলে সন্দেহ ছিল চিকিৎসকদের একাংশের। তাই তিনি মারা যাওয়ার পর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। বরং তাঁর সোয়াবের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছিল। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছিল, রিপোর্ট না-মেলা পর্যন্ত মৃতদেহ পরিবারকে দেওয়া যাবে না।

এ কথা জানার পরেই গ্রামে তাঁর পরিবার এবং স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। তবে সোয়াব পরীক্ষার রিপোর্ট মেলার পর শনিবার সকালে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মৃত মহিলা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন। মৃতদেহ পরিবারকে দেওয়া হবে। সকালে সেই খবর গ্রামে পৌঁছতেই হাঁফ ছাড়েন গোটা মুরলিগছ তথা বিধাননগরের বাসিন্দারা। মৃত্যুর ২৭ ঘণ্টা পর হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ আত্মীয়দের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

ঘটনা নিয়ে এতটাই আতঙ্কে ছিলেন পরিবারের লোকজনেরা যে এদিন মৃতদেহ দেওয়া হবে জানানোর পরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল লাগোয়া ওষুধের দোকানে গিয়ে গ্লাভস, স্যানিটাইজার কিনে আনেন তাঁরা। বাড়িতে মৃতদেহ নেওয়া হলেও লোকজন যাতে ভিড় না করেন, মৃতদেহ থেকে দূরত্ব বজায় রাখেন, সে দিকেও নজর রাখা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। বিষয়টি নিয়ে এলাকার বাসিন্দারাও যে উদ্বেগে ছিলেন সেই খবর পৌঁছয় পর্যটনমনন্ত্রী গৌতম দেবের কাছেও। এ দিন তাই মন্ত্রীও জানিয়ে দেন, ‘‘ওই মহিলার মৃত্যুর আগেই তাঁর সোয়াব পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। শুক্রবার রাত দেড়টার পর গভীর রাতে রিপোর্ট মেলে। তাঁর রিপোর্টে কিছু মেলেনি। নিয়ম মেনে মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে অন্ত্যেষ্টির জন্য।’’

এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ মৃতদেহ গ্রামে নিয়ে পৌঁছন পরিবারের লোকজনেরা। তবে হাসপাতালের রেসপিরেটরি ইনটেসিভ কেয়ার ইউনিট থেকে মৃতদেহ বার করতে সমস্যা পড়তে হয়। সেখানে করোনার রোগীদের রাখা হচ্ছে বলে মৃতদেহ নামাতে অস্বীকার করেন হাসপাতালের কর্মীরা। বাধ্য হয়ে মৃতার স্বামী এবং সঙ্গে থাকা পরিবারের লোকেরাই রিকুতে গিয়ে মৃতদেহ নামিয়ে আনেন। হাসপাতাল কর্মীদের এই ভূমিকা নিয়েও কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠেছে। মৃতার স্বামী জানান, তাঁরাও খুব চিন্তায় ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতালের ওই ওয়ার্ডে আমাদের ঢোকা ঠিক হবে কি না, সেটা একটা বড় বিষয়। তাই মৃতদেহ নামিয়ে দিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকবার অনুরোধ করি। তাঁরা ওয়ার্ডে ঢুকতে চাননি। বাধ্য হয়ে আমরাই গিয়ে লিফটে করে দেহ নামিয়ে আনি।’’

এলাকার জনপ্রতিনিধি তথা শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের বিরোধী দলনেতা কাজল ঘোষ বলেন, ‘‘গোটা গ্রামের লোক, বিধাননগরের বাসিন্দারা চিন্তায় ছিলেন। কেন না ওই মহিলা নানা জায়গায় চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। বাপের বাড়ি দাড়িভিটেও গিয়েছিলেন। অনেকের সঙ্গে মেলামেশা করেছিলেন। তিনি করোনা পজ়িটিভ রোগী হলে অনেক চিন্তার কারণ ছিল। তাই রিপোর্টে কিছু না-মেলায় এলাকার মানুষ হাঁফ ছেড়েছেন।’’ এদিন এলাকার মহানন্দার তীরে দেহ সৎকার করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE