অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা। —ফাইল চিত্র।
আচমকা এক টুইটে অশনি সঙ্কেত গ্রিন জোন কোচবিহারে! টুইটের মালিক অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা, যেখানে মঙ্গলবার রাতে তিনি জানিয়েছেন, কোচবিহার-ফেরত কোকরাঝাড়ের এক ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। মুহূর্তেই সেই টুইট ছড়িয়ে পড়ে। কোচবিহার জেলা প্রশাসনের কর্তা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। রাতেই খোঁজখবর শুরু হয় সেই ব্যক্তির এবং তাঁর সংস্পর্শে আসা বাকি লোকজনের।
রাতারাতি সেইসব তথ্যের অনেকটাই হদিশ করতে সক্ষম হয়েছে কোচবিহার জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৫০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাঁরা ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৬ জনের সঙ্গে নিবিড় ভাবেই মেলামেশা করেন ওই আক্রান্ত ব্যক্তি। তাঁদের লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান বলেন, “বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, কোচবিহারের এক ঠিকাদারের অধীনে আক্রান্ত ওই ব্যক্তি কাজ করতেন। ওই ঠিকাদার ৫০ জন শ্রমিক নিয়ে মাসকয়েক আগে দার্জিলিংয়ের মংপুতে গিয়েছিলেন। সেখানেই কাজ করছিলেন তাঁরা। লকডাউনে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সবাই সেখান থেকে ফিরতে শুরু করেন। আক্রান্ত ব্যক্তি মংপু যাওয়ার আগে কোচবিহার শহর সংলগ্ন টাকাগাছে একটি বাড়িতে থাকতেন।
সেখান থেকে ফেরার পথেও ওই বাড়িতে তিনি গিয়েছিলেন। সেখান থেকে কোচবিহারের ভবানীগঞ্জ বাজারেও তিনি যাতায়াত করেছেন। পরে একটি আনাজের গাড়িতে উঠে অসমে চলে যান। গত ১৩ এপ্রিল অসম পোঁছতেই তাঁকে কোয়রান্টিনে রাখা হয়। ২২ দিনের মাথায় মঙ্গলবার জানা যায়, ওই ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত।
প্রশ্ন উঠেছে, ওই ব্যক্তি টাকাগাছে কতক্ষণ ছিলেন? সেখানে তিনি কার কার সংস্পর্শে এসেছিলেন, তা নিয়ে এখনও কোনও স্পষ্ট তথ্য জোগাড় করতে পারেনি প্রশাসন। ওই ঠিকাদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ৫০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাঁরা ওই ব্যক্তির সঙ্গে কাজ করেছেন। তিনি যে আনাজের গাড়িটিতে অসমে গিয়েছিলেন সেটিকেও শনাক্ত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছে, অসমে পৌঁছনোর পরে ওই ব্যক্তি আরও কারও সংস্পর্শে এসেছিলেন কি না। তিনি যে কোয়রান্টিন সেন্টারে থাকেন, সেখানে আরও কেউ করোনায় আক্রান্ত কি না, সবই খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। কোচবিহার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মুখ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সবদিক খতিয়ে দেখেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
এ দিন সকাল পর্যন্ত ১২২৭ জনের লালারস পরীক্ষা হয়েছে জেলায়। তাঁদের মধ্যে ১১৩১ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ। এই অবস্থার মধ্যেই কোকরাঝাড়ের ওই ব্যক্তির তথ্য সামনে চলে আসায় চিন্তা বাড়ল প্রশাসনের।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy