এক পুরুষ ও এক মহিলাকে সারা রাত গাছে বেঁধে রেখে মারধরের অভিযোগ উঠল মালদহের ইংরেজবাজার থানার নরহাট্টা গ্রামপঞ্চায়েতের সাত ঘরিয়া গ্রামে। রবিবার দুপুরে গিয়ে পুলিশ ওই মহিলা ও পুরুষকে উদ্ধার করে। সেই সময় তাদেরও ওই গ্রামের বাসিন্দাদের কয়েকজন বাধা দেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ওই মহিলা এবং পুরুষকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজার থানার নরহাট্টা গ্রামপঞ্চায়েতের সাত ঘরিয়া গ্রামে বসবাস করেন ওই মহিলা। তাঁর স্বামী কর্ণাটকে কাজ করেন। তাঁর এক ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। দু’জনই স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, ওই মহিলাকে আপত্তিজনক অবস্থায় পাশের বুধিয়া গ্রামের এক বাসিন্দার সঙ্গে দেখা যায়। ওই ব্যক্তি দিনমজুরের কাজ করেন। তাঁরও দুই ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস দুয়েক আগে বুধিয়ার ওই ব্যক্তি ঘর সারানোর কাজ করছিলেন মহিলার বাড়িতে। সেই সূত্রেই দু’জনের আলাপ। তারপরে ওই ব্যক্তি মহিলার বাড়িতে আসা যাওয়া শুরু করেন। গ্রামবাসীরা তাতে আপত্তিও জানায়। তবে তাতে ওই মহিলা কোনও কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ।
তারপরে শনিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ ওই ব্যক্তিকে মহিলার বাড়িতে যেতে দেখেন কয়েকজন গ্রামবাসী। এরপরেই উত্তেজিত গ্রামবাসীদের একাংশ ওই দু’জনকে রাতভর গ্রামের একটি আম বাগানে বেঁধে রাখে। সঙ্গে চলে মারধর। এদিন সকাল আটটা নাগাদ ওই মহিলার হাত খুলে দেন গ্রামবাসীরা। তবে ওই ব্যক্তিকে বেঁধেই রাখা হয়।
গ্রামবাসীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেলে গ্রামে সালিশি সভা বসানোর কথা হয়েছিল। তবে তার আগেই বেলা ১১টা নাগাদ ইংরেজবাজার থানার পুলিশ খবর পেয়ে গ্রামে যায়।।
ওই মহিলা বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তিকে বাড়িতে কাজ করানো হবে বলে ডাকা হয়েছিল। গ্রামের কিছু মানুষকে আমাদের বদনাম করার জন্য এমন করেছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বেঁধে রেখে সারা রাত নির্যাতন করা হয়েছে। স্বামীকে পুরো বিষয়টি ফোনে জানিয়েছি। উনি এলে আমরা থানাতে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানাব।’’
গ্রামবাসীরা অবশ্য মারধরের কথা অস্বীকার করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা তথা নরহাট্টা গ্রামপঞ্চায়েতের সিপিএমের প্রধান সফিকুল আলম বলেন, ‘‘ঘটনাটি জানা মাত্র পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। নিজের হাতের আইন তুলে নেওয়া কখনও মেনে নেওয়া যায় না। স্থানীয় বাসিন্দারা আমাকে জানিয়েছেন ওই ব্যক্তিকে বেঁধে রাখা হলেও মহিলাকে বাঁধা হয়নি। আর মারধরও করা হয়নি। পুলিশকে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy