আন্দোলন: যৌথমঞ্চের মিছিল। শিলিগুড়ির রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র
চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি-সহ একাধিক দাবিতে যৌথমঞ্চের উত্তরকন্যা অভিযানে মোর্চা এবং জিএনএলএফের অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন উঠল মঞ্চের অন্দরে।
বুধবার দুপুরে নৌকাঘাট মোড় থেকে মিছিল করে মঞ্চের কয়েক হাজার সদস্য অভিযান শুরু করেন। উত্তরকন্যার প্রায় এক কিলোমিটার আগে তিনবাত্তি মোড়ে মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। জাপের অমর লামা বা সিপিআরএমের কেপি সুব্বা অভিযানে অংশ নিলেও মোর্চা বা জিএনএলএফের শীর্ষ নেতৃত্বের কেউ ছিলেন না। দু’টি দলের শ্রমিক সংগঠনের তরফে প্রতিনিধিদের পাঠানো হলেও মিছিলে তাঁরা তেমন লোক আনেননি বলেও মঞ্চের নেতাদের আক্ষেপ। কয়েকজন প্রশ্ন তোলেন, ‘‘তাহলে কি মোর্চা বা জিএনএলএফ মঞ্চ থেকে সরে যাচ্ছে?’’
মঞ্চের নেতাদের অনেকেই জানিয়েছেন, পাহাড়ে অনির্দিষ্টকালের বন্ধের পর শান্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিনয় তামাঙ্গ এবং মন ঘিসিঙ্গের নেতৃত্বে দু’টি দল তাতে অংশ নিচ্ছে। বিনয় জিটিএ-র মাথায় বসেছেন। মনও প্রশাসনিক পদ পেয়েছেন। এতে রাজ্যের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করাটা দু’ দলের পক্ষেই এই মুহূর্তে অস্বস্তিকর। বিভিন্ন ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে শাসক দলের সঙ্গে তাঁদের সুর মেলাতেও দেখা গিয়েছে। তাই চা শ্রমিকদের কথা ভেবে আন্দোলনে প্রতিনিধিদের পাঠালেও লোকবল এনে সক্রিয়তা দেখাতে চাননি মোর্চা বা জিএনএলএফ।
যদিও যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক তথা সিটু নেতা জিয়াউল আলম বলেন, ‘‘মোর্চার সংগঠনের নেত্রীর আদালতে মামলা রয়েছে। তাই আসতে পারেনি। তবে ওদের কিছু লোকজন ছিল। দু’ দলই আমাদের সঙ্গে আছে।’’
এ দিন সিংবুল চা বাগানের জিএনএলএফ নেতা নবীন থাপা, এবং টিংলিং চা বাগানের মোর্চা নেতা সুরজ থাপা, বিগম সুব্বারা কিছু লোকজন নিয়ে অভিযানে সামিল হন। সিপিএম, সিপিআই, আরএসপি, কংগ্রেস, বা সিপিআইএমএল লিবারেশনের মত বিপুল পরিমাণ লোক আনতে দেখা যায়নি। পতাকাও দেখা যায়নি। নবীন থাপা বা সুরজ থাপা’রা শুধু বলেন, ‘‘নেতানেত্রীরা অনেকে ব্যস্ত আছেন। অংশগ্রহণ করা হয়েছে। এটাই তো বড় বিষয়।’’
এ দিন বেলা ১২টার পরিবর্তে মিছিল শুরু হয় দেড়টা নাগাদ। পুলিশের তৈরি প্রথম ব্যারিকেড ভাঙলেও তিনবাত্তি মোড়ে ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টাই করেননি আন্দোলনকারী নেতারা। আধঘণ্টা তাঁরা এশিয়ান হাইওয়ের উপরে বসে থেকে এনজেপির দিকে চলে যান। মঞ্চের নেতারা পরে উত্তরকন্যায় গিয়ে বিভাগীয় কমিশনার বরুণ রায়ের কাছে দাবিপত্র পেশ করেন। মিছিলের জেরে ঘণ্টাখানেক এশিয়ান হাইওয়েতে যানজট হয়। স্কুলবাসও আটকায়। অ্যাম্বুল্যান্সকে ঘুরপথে যাতায়াত করতে হয়। আইএনটিইউসি-র জেলা সভাপতি অলোক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দু’ বছর হতে চলল এখনও ন্যূনতম মজুরি ঠিক হল না। এখন অন্তর্বর্তী মজুরি চালু করতে চাইছে সরকার। তেমনিই রেশনের বিষয়টিও স্থির হয়নি। এ ছাড়া জমির পাট্টার দাবিও ঝুলে রয়েছে। আমরা কমিশনারকে সব বলে এলাম। আগামীতে দেখব, নইলে আন্দোলনে বা আইনি পথে যেতে হবে।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy