Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

শহরে বড় মাঠ কই, দূষণ মেনেও মহানন্দার চরেই বইমেলা

এই শীতে জল শুকিয়ে একেই শীর্ণকায়া মহানন্দা। তার উপরে নদীতে ভেসে বেড়াচ্ছে পুজোর নানা সামগ্রী, থার্মোকল, আরও কত কী! একাধিক জায়গায় গজিয়ে ওঠা চরেও ফেলা হচ্ছে আবর্জনা।

পারে: মাঠের অভাবে নদীর চরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৩০তম মালদহ জেলা বই মেলা ও প্রদর্শনী। রয়েছে দুষণের আশঙ্কা। ছবি: তথাগত সেন শর্মা

পারে: মাঠের অভাবে নদীর চরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৩০তম মালদহ জেলা বই মেলা ও প্রদর্শনী। রয়েছে দুষণের আশঙ্কা। ছবি: তথাগত সেন শর্মা

নিজস্ব সংবাদদাতা 
মালদহ শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:০৪
Share: Save:

এই শীতে জল শুকিয়ে একেই শীর্ণকায়া মহানন্দা। তার উপরে নদীতে ভেসে বেড়াচ্ছে পুজোর নানা সামগ্রী, থার্মোকল, আরও কত কী! একাধিক জায়গায় গজিয়ে ওঠা চরেও ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। পাড়ের বাসিন্দাদের একাংশের প্রাতঃকৃত্য সারার জায়গাও সেই চর। গবাদিপশুর বিচরণ ক্ষেত্র তো বটেই। ফলে এমনিতেই দূষণ বাড়ছে। তার উপরে ইংরেজবাজার শহরের সদরঘাটে মহানন্দার এমনই এক চরে এ বারের মালদহ জেলা বইমেলা শুরু হওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

এ নিয়ে বইমেলাপ্রেমীদের একাংশ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদও শুরু করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে, শহরে কি আর কোনও মাঠ ছিল না যে সেখানে না করে নদীর চরে বইমেলা করতে হল?

শুরুতে জেলা বইমেলা শহরের বৃন্দাবনী মাঠেই হত। কিন্তু মেলার কলেবর বৃদ্ধি পাওয়ায় সেই বইমেলা ১৯৯৫ সালে স্থানান্তরিত হয়ে যায় রথবাড়ি সংলগ্ন মালদহ কলেজ মাঠে। ২৪ বছর ধরে সেই মাঠেই মেলা চলছিল। শহরের অনেক বইপ্রেমী বলছেন, এ বারে শহরের সদরঘাটের যে চরে বইমেলা হচ্ছে তা বইমেলার পক্ষে কোনও মতেই আদর্শ নয়। এলাকাটি শহরের এক প্রান্তে। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভাল নয়। এ ছাড়া নদীর পাশে সব সময়ই জোর হাওয়া বইছে। শীতের সন্ধেয় সেও এক সমস্যা তো বটেই।

পাশাপাশি, বইমেলা চত্বরে নানা খাবারের স্টল থাকায় উচ্ছিষ্ট ও আবর্জনা নদীতে ফেলা হলে দূষণ আরও মারাত্মক আকার নেবে। মালদহের বইপ্রেমী পুষ্পজিৎ রায়, শুভাশিস সরকার, নটরাজ মুখোপাধ্যায়রা বলেন, ‘‘কলকাতার বইমেলার পরে রাজ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম বইমেলা হিসেবে পরিচিত মালদহের এই জেলা বইমেলা। কিন্তু নদীর চরে মেলা করায় নানা সংশয় তৈরি হচ্ছে।’’

বইমেলা কমিটি সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, জেলার লোকাল লাইব্রেরি অথরিটি এ বারে কলেজ মাঠেই মেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে মালদহ কলেজের প্ল্যাটিনাম জুবিলি উৎসব থাকায় বইমেলার জন্য মাঠ মেলেনি বলে দাবি তাঁদের।

জেলা বইমেলা কমিটির এক কর্তা বলেন, ‘‘কলেজ মাঠ যখন পাওয়া যাবে না বলে জানা যায় তখন জেলাশাসক ও একটি প্রতিনিধি দল শহরের বৃন্দাবনী মাঠ, রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরের পাশের মাঠ প্রভৃতি পরিদর্শন করেন। কিন্তু ১৭০টি বইয়ের স্টল, পাঁচটি ছোট-বড় মঞ্চ, প্রায় ৫০টি নন-বুক স্টল ও ২০টি ফুড স্টল করার জায়গা সেখানে মেলেনি। এ মাসের শেষে মুখ্যমন্ত্রীর মালদহ সফরের সম্ভাবনা থাকায় ডিএসএ মাঠেও বইমেলা সম্ভব ছিল না। আর বড় কোনও মাঠ না থাকায় সদরঘাটের এই চরের মাঠেই বইমেলা করতে বাধ্য হতে হয়েছে।’’ কমিটির যুগ্ম সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, ‘‘অন্য মাঠে সেই পরিসর না থাকায় বাধ্য হয়েই এই চরে এ বারের বইমেলা করা হল। তবে তাতে মেলার জৌলুস কমেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mahananda river Pollution Book fair
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE