Advertisement
১১ মে ২০২৪

কার্ডে তথ্য ভুল, ভয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চাষির

পুলিশ জানায়, বছর চুয়াল্লিশের সইফুর পেশায় চাষি।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হেমতাবাদ শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:১৩
Share: Save:

রেশন কার্ড ও জমির দলিলের সঙ্গে ভোটার ও আধার কার্ডে নামের মিল নেই। ভোটার কার্ডে অন্যের ছবি। অভিযোগ, অনেক দিন ধরে ঘুরেও সেই তথ্য ও ছবি সংশোধন করতে পারছিলেন না হেমতাবাদের ওই চাষি। তাঁর পরিজনদের নালিশ, নতুন নাগরিকত্ব আইন পাশের পর থেকে দেশ হারানোর আতঙ্কে ছিলেন। তার জেরে মঙ্গলবার বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সইফুর রহমান।

পুলিশ জানায়, বছর চুয়াল্লিশের সইফুর পেশায় চাষি। বাড়ি হেমতাবাদ থানার চৈনগর পঞ্চায়েতের আসমানহাটে। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রায়গঞ্জ মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সইফুর বলেন, ‘‘নতুন আইন পাশ হয়ে যাওয়ার পরে অনেকেই বলছেন, ভোটার ও আধার কার্ডে তথ্য ভুল থাকলে আমার নাগরিকত্ব থাকবে না। আতঙ্কে রয়েছি। চেষ্টা করেও কার্ডের তথ্য ও ছবি সংশোধন করতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলাম।’’

উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি কবিতা বর্মণের বক্তব্য, জেলা পরিষদের তরফে সইফুর ও তাঁর পরিবারের লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগ করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজেদের দু’বিঘা জমিতে সারা বছর চাষ করে সংসার চালান সইফুর। তাঁর স্ত্রী মহসিনা খাতুন। তাঁদের তিন মেয়ে, এক ছেলে। মহসিনার অভিযোগ, মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ সইফুর কীটনাশকে বোতল ও একটি গ্লাস নিয়ে আচমকা বাড়ি থেকে বের হন তাঁর স্বামী। তা দেখে সইফুরের বড় মেয়ে সাবনুর খাতুনের সন্দেহ হয়। সাবনুর সে কথা মহসিনাকে জানায়।

মহসিনার কথায়, ‘‘দৌড়ে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরের জমিতে গিয়ে দেখি স্বামী গ্লাসে ঢেলে কীটনাশক খাচ্ছেন। প্রতিবেশীদের সাহায্যে ওকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করি।’’

এ দিন হাসপাতালে সইফুর জানান, রেশন কার্ড ও জমির দলিলে তাঁর নাম সইফুর রহমান লেখা রয়েছে। কিন্তু ভোটার কার্ডে রয়েছে রহমান সইফুর। ভোটার কার্ডে তাঁর ছবির বদলে অন্যের ছবি রয়েছে। দু’মাস আগে এলাকার একটি সরকারি শিবিরে গিয়ে সংশোধনের চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু সংশোধন প্রক্রিয়ায় তাঁর আধার কার্ড বাতিল বলে দেখানো হয়। এর পরে নতুন আধার কার্ডের জন্য আবেদন করেন। কয়েক দিন আগে নতুন কার্ড আসে। কিন্তু তাতেও তাঁর নাম রহমান সইফুর লেখা ছিল।

সইফুর জানিয়েছেন, ভোটার ও আধার কার্ড সংশোধনের জন্য দু’মাস ধরে একাধিক বার পঞ্চায়েত ও বিডিও অফিসে গিয়েছেন। কিন্তু প্রতিবারই তাঁকে জানানো হয়, কার্ড সংশোধন ও সংযোজনের কাজ বন্ধ আছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CAA NRC Farmer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE