ফেরা: মৃত শ্রমিকদের দেহ ফিরল ইটাহারের পাজলে। মৃতদের শোকার্ত পরিজনদের পাশে মন্ত্রী গোলাম রব্বানির। নিজস্ব চিত্র
উত্তরপ্রদেশের বরেলীতে মাটি চাপা পড়ে মৃত রায়গঞ্জ ও ইটাহারের ছয় শ্রমিকের পরিবারকে সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানি।
বৃহস্পতিবার সকালে তিনি ইটাহারের সুরুন-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাড়িওল, পাজল, রায়গঞ্জের গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েতের এলেঙ্গিয়া ও বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের ট্যাগরা এলাকায় মৃতদের বাড়ি যান। শ্রমিকদের কবর দেওয়ার আগে ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও যোগ দেন। পরিবারের সদস্যদের তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আমি এসেছি। মৃতদের পরিবারের পাশে সরকার রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ফোনে তাঁকে জানিয়েছেন, শীঘ্রই মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’’
মন্ত্রীর ওই আশ্বাসে অবশ্য সন্তুষ্ট হতে পারেননি মৃতদের পরিবারের লোকজন। বাড়িওলের মৃত শ্রমিক হাসান আলির কাকা রবিউল হক, পাজলের শ্রমিক কওসর আলির স্ত্রী রুপসানা বিবি ও নাজিমুল হকের স্ত্রী সাজিনূর বিবির আবেদন, তাঁদের স্বামীরা সংসারে একমাত্র রোজগেরে ছিলেন। দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণে সংসার বাঁচবে না। মৃতদের পরিবারের একজনের চাকরি দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা। একই দাবি এলেঙ্গিয়া নাজিমুদ্দিন হকের স্ত্রী ফতেমা খাতুন, মহিরুল হকের বাবা করিমুল হক, ট্যাগরার মৃত শ্রমিক নাজমুল হকের মামা হবিবুল্লা হকদেরও। এ ব্যাপারে মন্ত্রী বলেছেন, ‘‘বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব।’’ তিনি জানান, পরিবারগুলোকে সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর একটি করে ঘরও দেবে। আর কী ভাবে সাহায্য করা যায় তা দেখা হচ্ছে।
গত সোমবার উত্তরপ্রদেশের বরেলীতে বেসরকারি মোবাইল সংস্থার কেব্ল পাতার জন্য ২৫ ফুট গর্তে কাজ করতে নেমে মাটি চাপা পড়ে মারা যান ওই ছয় শ্রমিক। উত্তরপ্রদেশ সরকারের দেওয়া অ্যাম্বুল্যান্সে গত বুধবার রাত ১১টা নাগাদ রায়গঞ্জ থানায় মৃতদেহগুলি পৌঁছয়। মন্ত্রী গোলাম রব্বানির অভযোগ, ‘‘বরেলীতে ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহগুলো সেলাই না করে কাপড় ও পলিথিনে মুড়িয়ে পাঠানো হয়েছে। তাতে দেহগুলি পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়ায়। উত্তরপ্রদেশ সরকার যথাযথ ব্যবস্থা না করে কফিন ছাড়াই মৃতদেহগুলো পাঠিয়েছে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘মন্ত্রী মৃতদেহ নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছেন।’’ জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মীনা জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছেন।
বুধবার রাতে ট্যাগরার নাজমুলের দেহ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কবর দেওয়া হয়। বাকিদের দেহ রায়গঞ্জ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রাখা ছিল। এ দিন সকালে তাঁদের বাড়িতে যায়। সঙ্গে ছিলেন ইটাহারের জেলা পরিষদের সদস্য বিউটি বেগম ও দলের জেলা কমিটির সদস্য আসলাম আলি। রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত এ দিন মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy