Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
মূক-বধিরদের দিয়ে কাজ

তদন্তে প্রমাণ, সাসপেন্ড হোমের কর্তা

দীর্ঘদিন ধরেই তিনি হোমের মূক ও বধির আবাসিকদের হোম সাফাই ও হোমের বাগান পরিচর্যার কাজ করাচ্ছিলেন। সেই বাবদে খরচ দেখিয়ে তা আত্মসাৎ করছিলেন বলেও অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৬ ০২:৩১
Share: Save:

দীর্ঘদিন ধরেই তিনি হোমের মূক ও বধির আবাসিকদের হোম সাফাই ও হোমের বাগান পরিচর্যার কাজ করাচ্ছিলেন। সেই বাবদে খরচ দেখিয়ে তা আত্মসাৎ করছিলেন বলেও অভিযোগ। গত জুন মাসে এক মূক-বধির কিশোরকে জবরদস্তি গাছে উঠিয়ে জাম পাড়তে বাধ্য করান। কিন্তু, বৃষ্টিভেজা গাছে জাম পাড়তে উঠে পা পিছলে পড়ে সেই কিশোরের মৃত্যু হয়।

আবাসিক মৃত্যুর তদন্তে এমন তথ্য হাতে পেয়েই রায়গঞ্জের সূর্যোদয় মূক ও বধির হোমের অধ্যক্ষ পার্থসারথি দাসকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করেছেন উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক রণধীর কুমার। জেলাশাসক বলেন, ‘‘আবাসিকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নেমে প্রশাসন পার্থসারথিবাবুর বিরুদ্ধে নানা আপত্তিকর কাজকর্ম করানোর প্রমাণ পেয়েছে। সরকারি নিয়ম মেনে তাঁকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বরখাস্ত করে রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।’’ গত ১৫ জুলাই তাঁকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বরখাস্ত করা হয়। হোমের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক পিনাকী গুপ্ত।

গত ৩ জুন দুপুরে হোম চত্বরে জাম পাড়তে গিয়ে প্রায় ২০ ফুট উঁচু গাছের ডাল থেকে মাটিতে আছড়ে পড়ে উদিত পান্থ (১৭) নামে ওই মূক ও বধির আবাসিক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এরপর হোম কর্তৃপক্ষ তাঁকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করলে রাতে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। জেলাশাসকের নির্দেশে এরপরেই ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করেন রায়গঞ্জের মহকুমাশাসক থেন্ডুপ নামগেয়াল শেরপা। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মহকুমাশাসক সেই তদন্তের রিপোর্ট জেলাশাসকের কাছে পেশ করেন। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে এরপর জেলাশাসক পার্থসারথীবাবুকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বরখাস্ত করেন বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। পার্থসারথিবাবু বলেন, ‘‘জেলাশাসকের পাঠানো বরখাস্তের চিঠি হাতে পেয়েছি। আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বাড়ি থেকে হারিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ বা কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মূক ও বধির কিশোর কিশোরীদের উদ্ধার করে আদালতের নির্দেশে সূর্যোদয় মূক ও বধির আবাসিক হোমে রাখে। ২০০৭ সালের মে মাসে উদিতকে জলপাইগুড়ি শহর থেকে উদ্ধার করে আদালতের নির্দেশে ওই হোমে পাঠায় পুলিশ।

বর্তমানে ওই হোমে ৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী মূক ও বধির কিশোর ও কিশোরী মিলিয়ে ৫০ জন রয়েছেন। জেলাশাসকের দাবি, তদন্ত চলাকালীন আবাসিকদের খাবার, পোশাক ও বিভিন্ন দরকারি সামগ্রী কেনার জন্য অতীতে সরকারি আর্থিক বরাদ্দের সঠিক হিসেবও দেখাতে পারেননি পার্থসারথিবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

deaf-dumb home head
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE