E-Paper

দুর্নীতির দায়ে যেন যোগ্যদের সম্মানহানি না হয়, উঠছে দাবি

জলপাইগুড়ির বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা সমাজমাধ্যমে পুনর্নিয়োগের দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি, দুর্নীতির দায়ে যেন যোগ্যদের সামাজিক সম্মানহানি না হয়।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১০:১৫
সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হওয়ার জন্য নথি যোগাড় করছেন চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ।

সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হওয়ার জন্য নথি যোগাড় করছেন চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ। বুধবার মালদহ টাউন হলের বাইরে।

হাই কোর্টের নির্দেশে বাতিল হওয়া প্যানেলে নাম রয়েছে শিক্ষক দম্পতিরও। স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই চাকরিহারা হয়েছেন। পুনর্নিয়োগ না হলে অথবা সুপ্রিম কোর্টে স্থগিতাদেশ না পাওয়া পর্যন্ত সংসার চলবে কী করে, প্রশ্নের মুখে তাঁরা। পরিবারে দু’জনেই ছিলেন রোজগেরে, সন্তানেরা রয়েছে, প্রবীণেরা রয়েছেন। নিয়োগ-দুর্নীতির গেরোয় আপাতত সংসার নিয়েই প্রশ্নের
মুখে তাঁরা।

স্বামীর কথায়, “স্ত্রী এবং আমি দু’জনেই প্রাথমিক শিক্ষকতা দিয়ে জীবন শুরু করেছিলাম। বিয়ের পরে ২০১৬ সালে নিজেরা পরিকল্পনা করেই এসএসসিতে বসি। আমাদের নম্বর থেকে শুরু করে পরীক্ষা, কোনও কিছু নিয়েই প্রশ্ন বা সমস্যা নেই। এখন অন্যদের দোষে আমাদের চাকরি চলে গেল। পরিবারের পুরো রোজগারটাই তো বন্ধ হয়ে গেল।” সংসার চালানোই সমস্যা, এ কথা জানিয়ে শিক্ষিকা স্ত্রী বলেন, “অনেকে বলছেন, পাশে আছি। এখন তাঁদের কাছে হাত পেতে সংসার
চালাতে হবে নাকি?”

জলপাইগুড়ির বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা সমাজমাধ্যমে পুনর্নিয়োগের দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি, দুর্নীতির দায়ে যেন যোগ্যদের সামাজিক সম্মানহানি না হয়। চাকরি বাতিল তালিকায় থাকা এক শিক্ষকের কথায়, “বাজার-হাটে গেলে কারও-কারও এমন চাউনি দেখছি, লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে। অনেকে আবার জিজ্ঞেস করছেন, কী করে চাকরি পেয়েছিলাম! এ সব প্রশ্ন শুনে কুঁকড়ে যাচ্ছি। স্কুলে-কলেজে নম্বর ভাল ছিল। অনেক পরিশ্রম করে, পড়াশোনা করে চাকরি পেয়েছিলাম।”

জলপাইগুড়ির এক বিজ্ঞান শিক্ষক পড়ানোর জন্য জনপ্রিয়। নিজের স্কুল ছাড়াও অন্য স্কুলের পড়ুয়াদের তিনি কার্যত বিনা ফি-তে পড়ান। সেই শিক্ষকও রয়েছেন বাতিল তালিকায়। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, “ওই শিক্ষকের জন্যই স্কুলে উঁচু ক্লাসে পড়ুয়াদের ভর্তি হওয়ার চাহিদা রয়েছে। ওই শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রশ্নাতীত। তাঁর মতো এক জনের নাম অযোগ্যদের সঙ্গে জুড়ে গেল, এটাই দুঃখের।”

এ দিকে, নিয়োগ মামলায় ফের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ডাকের মুখে পড়তে পারেন শিক্ষা দফতরের সঙ্গে যুক্ত জলপাইগুড়ির অনেকে, এমনই দাবি সূত্রের। এর আগেও জলপাইগুড়ির জনপ্রতিনিধি এবং আধিকারিকদের বয়ান নিয়েছিল সিবিআই। যদিও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দাবি করেছেন, তাঁদের কাছে এ বিষয়ে কোনও খবর নেই।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jalpaiguri Calcutta High Court

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy