Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
মহাসঙ্কটে মহাসড়ক
National Highway Authority

ক্ষতিপূরণ নিয়ে জমি না ছাড়ায় নাম প্রকাশ

গুজরাতের পোরবন্দর থেকে অসমের শিলচর পর্যন্ত চার লেনের জাতীয় সড়কে এখন কেবলমাত্র এ রাজ্যেই কাজ বাকি রয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৪৬
Share: Save:

মাত্র ১২ কিলোমিটার! কয়েকশো কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ এবং তারপর ১০ বছর ধরে শুধু অপেক্ষা। এর পরেও পূর্ব-পশ্চিম মহাসড়কের জন্য ওই সামান্য অংশটুকুর জন্য প্রয়োজনীয় জমি হাতে পাননি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এর পরেও জমি হাতে না পেলে হয়তো ওইটুকু অংশের কাজ বাতিল করেই প্রকল্পটি গুটিয়ে ফেলতে হবে। সেই আশঙ্কায় বাধ্য হয়েই সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ক্ষতিপূরণ নিয়ে জমি না ছাড়া ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ্যে আনলেন কর্তৃপক্ষ।

কর্তৃপক্ষের আশা, এর ফলে টাকা নিয়েও জমি দখল করে বসে থাকা ব্যক্তিদের উপরে সাধারণ বাসিন্দাদের ‘চাপ’ তৈরি হতে পারে এবং তাঁরা জমি ছাড়তে পারেন। জানা গিয়েছে, ওই ১২ কিলোমিটার অংশে ৩৭৯ জনের জমি রয়েছে। ১০ বছর আগে মহাসড়কের জন্য জমি দেওয়ার শর্তেই কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ নিয়েছেন তাঁরা। সেই ক্ষতিপূরণের অঙ্ক কয়েকশো কোটি টাকার। কিন্তু ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও জমি হাতে পাননি কর্তৃপক্ষ। তাই শেষপর্যন্ত বাধ্য হয়েই এই পদক্ষেপ করতে হয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রকল্প অধিকর্তা সঞ্জীব শর্মা বলেন, “এ ছাড়া আমাদের কাছে অন্য কোনও উপায় ছিল না। শিলিগুড়ি লাগোয়া ফুলবাড়ি এলাকায় জমির জন্য অনেক বছর ধরে অপেক্ষা করেছি। তবু পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে ওই অংশ প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বাকি অংশে জমি পেতে একটা শেষ চেষ্টা চলছে।” ২০১০ সালে ১৫৪ কিলোমিটার জাতীয় সড়কের দু’ধারে মহাসড়কের জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছিল। এখন পুরো জমি হাতে পাননি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।

গুজরাতের পোরবন্দর থেকে অসমের শিলচর পর্যন্ত চার লেনের জাতীয় সড়কে এখন কেবলমাত্র এ রাজ্যেই কাজ বাকি রয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। শিলিগুড়ি লাগোয়া ঘোষপুকুর থেকে জলপাইগুড়ি শহর ছুঁয়ে আলিপুরদুয়ার দিয়ে অসমে যাচ্ছে সড়কটি। ঘোষপুকুর থেকে আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত অংশেই বিভিন্ন জায়গায় কাজ বাকি। কর্তৃপক্ষের দাবি, জমি জটেই কাজ আটকে গিয়েছে। ধূপগুড়ির পর থেকে সড়কের ১২ কিলোমিটার অংশের কোনও জমিই তাঁদের হাতে আসেনি। কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছেন, এক এক জন জমিদাতা লক্ষ থেকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পেলেও জমি ছাড়ছেন না। এক আধিকারিক বলেন, “জমিজাতারা আরও ক্ষতিপূরণ চাইছেন। আমরা ওঁদের বলছি আদালতে যেতে। ওঁরা রাজি হচ্ছেন না। প্রশাসনকে বলছি, যাঁরা টাকা নিয়েছেন তাঁদের জমিতে দখল উচ্ছেদ হোক। প্রশাসনও সেই পদক্ষেপ করছে না। মুশকিলে পড়েছি আমরা।”

এর পরেই সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিতে বাধ্য হতে হয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। তিনদিন ধরে ১২ কিলোমিটার রাস্তায় বসে থাকা ৩৭৯ জনের নামের তালিকা এবং কে কত ক্ষতিপূরণ নিয়েছেন তা প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, কেউ কেউ দেড় কোটি, আবার কেউ কেউ তারও বেশি ক্ষতিপূরণ নিয়েও জমি ছাড়েননি। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দাবি, বেশিদিন জমির অপেক্ষায় থাকা যাবে না। এবারেও কাজ না হলে যেখানে জমি মিলবে না, সেখানকার কাজ বাদ দিয়ে বাকি অংশের কাজ সেরে প্রকল্প গুটিয়ে ফেলা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

National Highway Authority Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE