Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
House wife fire burn

সাত দিনেও তিমিরে তদন্ত

বালুরঘাট শহরের বিশ্বাসপাড়ায় বিকট শব্দের পরে আগুনে ঝলসে বধূর মৃত্যুর ঘটনার পরে সাত দিন কেটে গেলেও ঘটনার কোনও কিনারা না হওয়ায় ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা।

এই বাড়িতেই ঘটে বিস্ফোরণ। নিজস্ব চিত্র

এই বাড়িতেই ঘটে বিস্ফোরণ। নিজস্ব চিত্র

অনুপরতন মোহান্ত
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:৪১
Share: Save:

ঘটনার সময় সেলুনে গিয়েছিলেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করলেও বিস্ফোরণের সময় বাড়িতেই ছিলেন শিবু সেন, এমনটাই দাবি করছেন প্রতিবেশীরা। প্রতিবেশীরা আরও জানান, চুল-দাড়ি কাটার প্রয়োজনে পাড়ার সেলুনেরই এক কর্মীকে শিবু বড়িতে ডেকে আনেন। বালুরঘাট শহরের বিশ্বাসপাড়ায় বিকট শব্দের পরে আগুনে ঝলসে বধূর মৃত্যুর ঘটনার পরে সাত দিন কেটে গেলেও ঘটনার কোনও কিনারা না হওয়ায় ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। বিস্ফোরণ হয়েছিল কিনা, এর পিছনে কেউ জড়িত কিনা এখনও জানতে পারেনি পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়েও স্পষ্ট কিছু জানাতে পারছে না তারা। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। তবে এখনও প্রতিমা সেনের (৪৫) পরিবারের তরফে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তাঁর দাদা তাপস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বোনের স্বামী তো রয়েছেন। অভিযোগ করলে উনি করবেন। আমি এ ব্যাপারে কী করব? তবে নিরপেক্ষ তদন্ত আমিও চাই।’’

এ দিন বিশ্বাসপাড়ার ওই সেলুন দোকানের কর্মী বলেন, ‘‘৩১ জানুয়ারি সকাল ১১টা নাগাদ বাড়ির তিনতলার ছাদে বসে শিবুবাবুর চুল দাড়ি কেটেছি। ওই বাড়ি থেকে বার হয়ে দোকানে ফেরার মিনিট পাঁচেকের মধ্যে বিকট শব্দ পাই।’’ ছুটে গিয়ে দেখেন লোকজনের ভিড়। ওই সময় শিবু বাড়িতেই ছিলেন বলে তিনি দাবি করেন। বাসিন্দারাই প্রতিমাকে বালুরঘাট হাসপাতালে নিয়ে যান। কলকাতায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় তাঁর। এ দিকে, বাড়ির নীচের তলা পুলিশের তরফে সিল করা হলেও সে দিনের পর থেকে ওই বাড়িতেই রয়েছেন শিবু। তদন্তে ঢিলেমির সুযোগে এর মধ্যে প্রয়োজনীয় প্রমাণ লোপাট হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা পড়শিদের।

কিন্তু ঘটনার পরে সাত দিন কেটে গেলেও বিস্ফোরণ তদন্ত নিয়ে পুলিশি অনীহায় এলাকাবাসী কার্যত অবাক। এ দিন শিবুর পাশের বাড়ি বাসিন্দা ব্যবসায়ী প্রদীপকুমার সাহা বলেন, ‘‘সে দিন টিভিতে ক্রিকেট দেখছিলাম। বিকট শব্দে বাড়ির সব কেঁপে উঠল। রাসায়নিক বিস্ফোরক ফাটলেই এমনটা হয়। দরজা জানলা ভেঙে গিয়েছে। জানলার কাচের টুকরো ছিটকে গিয়ে পড়েছে আশপাশের বাড়িতে।’’

ঘটনার পরে পুলিশ শিবুকে থানায় নিয়ে গিয়ে কোনও জিজ্ঞাসাবাদও করেনি বলে অভিযোগ। বাসিন্দারা জানান, তিন দিন পরে পুলিশ শুধু একবার এসে শিবুর সঙ্গে কথা বলে। বালুরঘাটের ডিএসপি ধীমান মিত্র বলেন, ‘‘স্ত্রী বিয়োগে তো শোকের মধ্যে ছিলেন শিবুবাবু। পরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনি কিছু জানেন না বলেছেন। আর ওই দিন শিবুর বাড়িতে বাথরুম পরিষ্কার করার অ্যাসিডের গন্ধ পাওয়া যায়। আমরা ফরেন্সিক তদন্তের আবেদন করেছি। তাঁরা এলে বিস্ফোরণ সম্পর্কে জানা যাবে।’’ কিন্তু কবে আসবে ফরেন্সিক দল, তার অবশ্য খবর নেই জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষের কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

House wife fire burn Police Investigation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE