Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

চোখে ধুলো পড়ে দুর্ঘটনা, মৃত ৬ জন

যে লরিটি ধাক্কা দেয়, তার চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর নাম ফিরদৌস আলম।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালিয়াচক শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৯ ০৭:১৩
Share: Save:

সানাইয়ের সুর যেন বদলে গেল বিষাদে। উৎসবের বাড়িতে নেমে এল অন্ধকার। বুধবার রাতে পথ দুর্ঘটনায় গাড়ির চালক এবং পাঁচ বরযাত্রীর মৃত্যু হয় মালদহের কালিয়াচক থানার সুজাপুরে। আহত হন দুই কিশোরী সহ দশ জন। তার দু’দিন কেটে গেলেও শোকে ডুবে রয়েছে কালিয়াচকের ভবানীপুর গ্রাম। শুক্রবার বাতিল করা হয়েছে বৌভাতের অনুষ্ঠানও।

যে লরিটি ধাক্কা দেয়, তার চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর নাম ফিরদৌস আলম। লরিটি মাছ নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসছিল বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ফিরদৌস দাবি করেছেন, কালিয়াচক থানার সুজাপুর স্ট্যান্ডের কাছাকাছি এলাকায় পৌঁছনোর পরে আচমকা তাঁর চোখে ধুলো উড়ে এসে পড়ে। চোখ জ্বালা করতে শুরু করে। চোখ কচলাতে শুরু করেন। তার পরে চোখ খুলতেই দেখেন একেবারে সামনে রাস্তার পাশে একটি গাড়ি দাঁড়িয়ে। তখন আর তিনি লরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি বলে ফিরদৌস পুলিশকে জানিয়েছেন। পুলিশকে তিনি জানান, টানা অনেক ক্ষণ গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তবে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ১৫ কিলোমিটার মতো দূরের ফরাক্কায় কিছু ক্ষণ বিশ্রাম নিয়েছিলেন। ফিরদৌস কোচবিহারের কোতোয়ালি থানা এলাকার বাসিন্দা। গাজল থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সেই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মারা যান তপন মণ্ডল (২৫) ও সুবোধ ঘোষ (৫০)। স্থানীয় বাসিন্দারা আহতদের উদ্ধার করেন। ভর্তি করা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানেই মৃত্যু হয় বাপন ঘোষ (২১), শেখর ঘোষ (২৮) এবং ছোট গাড়িটির চালক সালোয়ার শেখ (৩২)। আর কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় ধনঞ্জয় ঘোষের (৩২)। আহত সুরজিৎ ঘোষ বলেন, “জল কেনার জন্য রাস্তার ধারে গাড়ি দাঁড় করানো হয়। আমাদের গাড়ির পিছনের ইন্ডিকেটরও জ্বলছিল। তারপরেও লরির চালক ধাক্কা দিল।’’

ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ ঘোষের বুধবার বিয়ে ছিল গাজলের আলমপুরের বাসিন্দা ধীরেন ঘোষের মেয়ে সান্ত্বনার সঙ্গে। রাত সাড়ে দশটা নাগাদ বিয়ে করতে বাড়ি থেকে বেরোন বিশ্বজিৎ। সঙ্গে আরও সাতটি বরযাত্রী বোঝাই ছোট গাড়ি ছিল। তারই একটিতে রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ জাতীয় সড়কের উপরে দুর্ঘটনা হয়। গাড়িটি নয়নজুলিতে উল্টে যায়।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন রাতে নামমাত্র বিয়ে হয়েছে। বৌভাতের জন্য প্যান্ডেল থেকে শুরু করে আলো সবই বসানো হয়েছিল। তবে দুর্ঘটনায় পাঁচ নিকট আত্মীয়ের মৃত্যুর ঘটনায় বৌভাত বাতিল হয়ে গিয়েছে। বিশ্বজিৎ বলেন, “দুর্ঘটনার খবর শুনেই বিয়ের রাতে বরযাত্রীরা গাজল থেকে ফিরে যায়। বিয়ে করে রাতেই আমরা বাড়ি ফিরেছি। দুর্ঘটনায় খুড়তুতো ভাই, দাদা, জামাইবাবুর মৃত্যু হয়েছে। সকলেই শোকাহত। তাই অনুষ্ঠান বাতিল করে দেওয়া হয়।”

বৃহস্পতিবার মৃতদেহগুলি গ্রামে পৌঁছয়। এই দিনই গ্রামে গিয়ে শোকার্ত পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন মোথাবাড়ির বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Car Accident Kaliachak Malda Marriage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE