এই সেই চিতাবাঘ।
ডিসেম্বরের শেষে দার্জিলিংয়ে বরফ। আর জানুয়ারির শুরুতেই তার কাছেই হ্যাপি ভ্যালিতে দেখা মিলল চিতাবাঘের।
গাড়ির আলোয় দু’জোড়া জ্বলন্ত চোখ দেখে হঠাৎ থমকে গিয়েছিলেন মার্সিয়ান। সম্বিৎ ফিরতেই তাঁর চোখ স্থির। গাড়ির হেডলাইটের আলোয় তিনি দেখেন সামনে কালভার্টের উপরে বসে রয়েছে চিতাবাঘ। সোমবারের ঘটনা। জায়গাটা হ্যাপি ভ্যালি চা বাগান ও দার্জিলিং কলেজের মাঝামাঝি, যা দার্জিলিং ম্যালের কাছেই। এক মুহূর্ত দেরি না করে গাড়িতে বসেই দ্রুত চিতাবাঘকে লেন্সবন্দি করেন সেন্ট পলস স্কুলের শিক্ষক মার্সিয়ান জোশি। তোলেন ভিডিয়ো-ও। সেটাই ভাইরাল হওয়ায় এখন চিতাবাঘের আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসেছে ‘কুইন অব হিলস’-এ। ম্যাল লাগোয়া নির্জন পাহাড়ি পথে হাঁটাতলা করতে ভয় পাচ্ছেন অনেকেই। ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার।
তবে দার্জিলিংয়ের ডিএফও ভিকাশ ভি বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সন্ধ্যার পরে লাগোয়া বনাঞ্চল থেকে চিতাবাঘ এসে লোকালয়ের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে এমন শুনেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। লোকালয় থেকে গবাদি পশু তুলে নিয়েছে শোনা গেলেই সেখানে খাঁচা পাতা হবে বলে বন দফতর জানিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার সন্ধ্যায়। শহরে কাজ সেরে স্কুলের আবাসনে ফিরছিলেন জোশি। দূর থেকে দেখে প্রথমে বুঝতে পারেননি, কাছে যেতেই বুঝতে পারেন একটি কালভার্টের উপরে বসে রয়েছে চিতাবাঘ। গাড়িতে বসেই ক্যামেরা বের করে ছবি তোলা শুরু করেন তিনি। ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, গাড়ির আলো দেখলেও তর্জন-গর্জন করেনি চিতাবাঘটি। লাফ দিয়ে নেমে পাশের চা বাগানের ঝোপে মিলিয়ে যায়। সেই দৃশ্য ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে কাছাকাছি এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে।
আরও পড়ুন: ১০০ কোটি টাকার ‘প্রতারণা’, পাকড়াও
ম্যাল থেকে মহাকাল মন্দিরের পাশ দিয়ে যে রাস্তাটি রাজভবনের দিকে চলে গিয়েছে তা সন্ধ্যার পরে একেবারেই নির্জন হয়ে যায়। পাশেই ঝোপ রয়েছে। ওই এলাকার হোটেলকর্মী রাজেন প্রধান বলেন, ‘‘আগে লামাহাটা, জলাপাহাড়, কাকঝোরে চিতাবাঘ দেখা গিয়েছিল। এখন তো দেখছি ম্যালের কাছে ঘোরাঘুরি শুরু করেছে। হয়তো ম্যালের আশেপাশে অনেক কুকুর রাতে থাকে বলে হানা দিতে পারে।’’ আর এক বাসিন্দা নরবু ভুটিয়া বলেন, ‘‘সন্ধ্যার পরে একা বাইরে যাচ্ছি না।’’
হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের (ন্যাফ) মুখপাত্র তথা রাজ্য বন্যপ্রাণ বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য অনিমেষ বসু অবশ্য জানান, ওই এলাকায় সন্ধ্যার পরে চিতাবাঘ ঘোরাফেরা করাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তিনি বলেন, ‘‘হ্যাপি ভ্যালি চা বাগানের পরেই সিঞ্চল বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য। সেখানে চিতাবাঘ রয়েছে। তেমন হলে অবশ্যই খাঁচা পাতা দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy