প্রতীকী ছবি।
কতদিন পর ট্রেন চলবে! শুনেই চোখে জল চলে এসেছিল ওঁদের। এক মুহূর্তও দেরি করেননি। টিকিটের খোঁজ করতে পৌঁছে গিয়েছিলেন সাইবার ক্যাফেতে। সেখানে তাঁদের জানানো হয়, দিল্লি থেকে অসমমুখী সব ট্রেন শীতাতপনিয়ন্ত্রিত। প্রতি টিকিটের দাম পড়বে সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। শুনে হতবাক হয়ে যান ওঁরা। আবার ছোটেন আর এক জায়গায়। সেখানেও ওই একই কথা শুনে ভেঙে পড়েছেন ওঁরা। ওঁদের বক্তব্য, ‘‘দু’বেলা ভাল করে খেতেই পাচ্ছি না। এত টাকা দিয়ে টিকিট কিনব কী ভাবে?’’
নয়ডা থেকে কোচবিহারের বাসিন্দা আয়ুব হোসেনের কথায়, “কারখানায় কাজ করে সংসার চালাতাম। দেড় মাস কারখানা বন্ধ। বাড়ি ফেরার জন্য এত টাকা কোথায় পাব? খাবারের টাকাই তো জোগাড় করতে পারছি না।” মহম্মদ ফিরদৌস বলেন, “আশা নিয়ে বাড়ি ফেরার দিন গুনছিলাম। তা আর হল না।”
কেউ দু-বছর, কেউ তিন বছর ধরে, আবার কেউ ছ-মাস হল কাজের খোঁজে কোচবিহার থেকে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হতেই সেই বাসিন্দাদের কেউ বাড়ি ফিরেছেন। কেউ ফিরতে পারেননি। ওই না-ফেরার তালিকাতেই রয়েছেন আয়ুব-ফিরদৌসরা। তাঁদের দাবি, শুধু নয়ডাতেই এক হাজারের উপরে মানুষ রয়েছেন, যাঁরা কোচবিহারের বাসিন্দা। লকডাউনের শুরুতে জমানো টাকা খরচ করে খাবারের ব্যবস্থা করছিলেন। পরে সেই টাকাও শেষ হতে থাকে। সরকারি ভাবে কোনও ত্রাণও পৌঁছয়নি ওঁদের ঘরে। বেসরকারি উদোগে এক-দুদিন চাল এবং আলুর সংস্থান হয়েছিল।
দিনকয়েক ধরে ট্রেন চলার কথা জানতে পেরে আশার আলো ছড়িয়ে পড়ে আয়ুবদের মহল্লায়। ফোনে খোঁজখবর নিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, সরকার তাঁদের ট্রেনে করে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করবেন। তাঁদের টিকিট কাটতে হবে না। সেই আশা সোমবার সকালেই শেষ হয়ে যায়। টিকিটের দাম শুনে হতাশ হয়ে পড়েন আয়ুবরা। ওঁদেরই সঙ্গী খাইরুল বলেন, “টিকিট কাটব বলে আমরা বিভিন্ন ক্যাফেতে যোগাযোগ করতে শুরু করি। তাঁদের কাছে টিকিটের দাম শুনে আমরা তো অবাক। কোথায় পাব এত টাকা?”
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “রাজ্য সরকার শ্রমিকদের পাশে আছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগের কথা সবাই জানেন। রেল সব জেনেও ভাড়া মকুব করেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy