বৈঠক: ‘প্রয়াস’ হলে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। নিজস্ব চিত্র
লক্ষ্য ছিল চাল জোগানে রাজ্যের সব জেলাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার। অর্থাৎ জেলায় রেশন-সহ নানা সরকারি প্রকল্পে যে পরিমাণ চাল প্রয়োজন, তার সবটারই জোগান দেবে সংশ্লিষ্ট জেলাই। কিন্তু জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার— উত্তরবঙ্গের এই তিন জেলার কারণে সেই লক্ষ্যপূরণে ধাক্কা খেয়েছে খাদ্য দফতর। বুধবার জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলার খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের আধিকারিক থেকে প্রশাসনিক কর্তাদের এ নিয়ে বকাঝকাও শুনতে হল খাদ্যমন্ত্রীর জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কাছে। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে জেলার প্রতিটি গ্রামে মাইকে ঘোষণা করে ধান কেনার শিবির আয়োজনের নির্দেশ দেওযা হয়েছে জেলাশাসকদের।
এ দিন জলপাইগুড়ির ‘প্রয়াস’ হলে বৈঠক করেন খাদ্যমন্ত্রী। দুই জেলার আধিকারিক থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রতিনিধি জেলাশাসকদের সকলকেই ডাকা হয়েছিল বৈঠকে। সূত্রের খবর, ধান কেনার পরিমাণ শুনে রেগে যান খাদ্যমন্ত্রী। কেন এখন জেলা পিছিয়ে রয়েছে তা জানতে চান। কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি কোনও মহল। মন্ত্রী বলেন, “কোনও কারণ শুনতে চাই না। যে ভাবেই হোক, ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে হবে।” প্রয়োজনে জেলার সব কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান সংগ্রহ করতে হবে বলে নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
পরে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “উত্তরবঙ্গের তিনটে জেলায় আশানুরূপ ধান কেনা যায়নি। কেন হয়নি তা জানতে চেয়েছি। এজন্য আমাদের সার্বিক লক্ষ্যেরও ক্ষতি হচ্ছে।” প্রশাসনের যুক্তি ছিল, খোলা বাজারে ধানের দাম এখন অনেকটাই বেশি থাকায় কৃষকেরা খাদ্য দফতরে ধান নিয়ে আসছেন না। এই যুক্তি মানতে চাননি মন্ত্রী। দক্ষিণ দিনাজপুর, ২৪ পরগনার উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এই সব জেলার খোলাবাজারেও তো ধানের দাম বেশি। তারপরেও এখানে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে উদ্বৃত্ত ধান সরকারের ঘরে রয়েছে। ওরা পারলে আপনারা পারবেন না কেন?”
খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে জলপাইগুড়ি জেলায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লক্ষ ৭০ হাজার মেট্রিক টন। গত ডিসেম্বর থেকে শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত জেলায় ধান কেনা হয়েছে ৭০ হাজার মেট্রিক টনের কাছাকাছি। এই পরিসংখ্যানে রেগে যান মন্ত্রী। এ বছর সিকিম এবং অসমেও খাদ্য নিগমের মাধ্যমে উদ্বৃত্ত চাল পাঠাচ্ছে রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতিতে জেলাগুলিতে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলে সেই সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারেও বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy