Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

গভীর রাতে খুন, তোলপাড় তপসিখাতা

মঙ্গলবার রাতে তপসিখাতা জয় বাংলা হাটে ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই সোনা রায় নামের তৃণমূলের এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নিহত: পড়ে রয়েছে তুষার বর্মণের দেহ। ছবি: নারায়ণ দে

নিহত: পড়ে রয়েছে তুষার বর্মণের দেহ। ছবি: নারায়ণ দে

পার্থ চক্রবর্তী
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৬:৪০
Share: Save:

শীতের রাতে বাজারের মধ্যে খুন করা হল তৃণমূলের কর্মী এক যুবককে। তাঁর নাম তুষার বর্মণ (২৫)। প্রথমে তাঁকে মারধর করা হয়। তারপরে মাটিতে ফেলে খুব কাছ থেকে দলেরই পরোরপাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শম্ভু রায় তাঁকে গুলি করে খুন করেন বলে অভিযোগ।

মঙ্গলবার রাতে তপসিখাতা জয় বাংলা হাটে ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই সোনা রায় নামের তৃণমূলের এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্ত উপপ্রধান সহ তিন জন এখনও পলাতক।

অভিযোগ, তোলাবাজি ও এলাকা দখল নিয়ে বিবাদের জেরে তুষারকে শম্ভু গুলি করে খুন করে। তুষারের জ্যাঠামশায় অরুণচন্দ্র বর্মণের অভিযোগ, “তুষার প্রথম থেকেই এই তোলাবাজির প্রতিবাদ করায় শম্ভু, সোনাদের কুনজরে পড়ে যায়। যার জেরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের বোর্ড গঠনের সময় একটি বাড়িতে হামলার মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে তুষারকে জেলও খাটায় তারা। তারপর তুষার সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ ছেড়ে পাওয়ারগ্রিডে ঠিকাদারির কাজ শুরু করলে, সেই কাজেও শম্ভু, সোনারা তাকে বাধা দিতে থাকে।”

স্থানীয় সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের পরোরপাড় গ্রাম পঞ্চায়েতটি তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলেই পরিচিত। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশিরভাগ আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় তারা। কিন্তু অভিযোগ, এলাকায় অনেকদিন থেকেই আদি ও নব্য তৃণমূলের মধ্যে একটা কোন্দল রয়েছে।

সূত্রের খবর, এক সময় সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ করা তুষারের পরিবার এলাকায় আদি তৃণমূল সমর্থক বলেই পরিচিত। অন্যদিকে অভিযুক্ত শম্ভু রায়, সোনা রায় সহ বাকিরা নব্য তৃণমূল বলে পরিচিত। তুষারের বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, তুষারের তুলনায় শম্ভু, সোনারা দলের ব্লক শীর্ষ নেতৃত্বের খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন। যার জেরে এক সময় বুথ সহ সভাপতি দায়িত্ব সামালালেও সেই পদ ছাড়তে হয় তুষারকে। অন্যদিকে শম্ভু, সোনাদের প্রভাব বাড়তে থাকে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার রাত পৌনে দশটা নাগাদ তোপসিখাতার জয় বাংলা হাটে এই খুনের ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগ, সেই সময় শম্ভু, সোনা সহ কয়েকজন তপন রায় নামে তুষারের এক দূর সম্পর্কের ভাইকে হাটের মধ্যে মারছিল। তপন ফোন করে তুষারকে ঘটনাটি জানায়। তখন সেখান থেকে এক কিলোমিটার দূরে নিজের বাড়িতেই ছিল তুষার। ফোন পেয়েই এক বন্ধুকে নিয়ে গাড়ি করে জয় বাংলা হাটে চলে যান তিনি।

তবে তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার ১ ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি মনোরঞ্জন দে বলেন, ‘‘তৃণমূল কর্মীরা প্রত্যেকেই আমার কাছের। তুষারও দলের সক্রিয় সৈনিক ছিলেন। ব্যক্তিগত কারণেই এটা হয়েছে বলে মনে হয়। এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder TMC Political Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE