বন্ধ: বারবিশা শিল্প বিকাশ কেন্দ্রের ফাঁকা চত্বর। নিজস্ব চিত্র
বাম আমলে ক্ষুদ্র শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে গড়ে তোলা হয় শিল্প বিকাশ কেন্দ্র। কিন্তু গত ১২ বছরের মধ্যে একটি শিল্পও গড়ে ওঠেনি সেখানে। ওই শিল্প বিকাশ কেন্দ্র এসএসবি (সীমা সুরক্ষা বল)-র অস্থায়ী ক্যাম্প হিসাবে ব্যবহার হয়েছে দীর্ঘদিন। এখন সেটা যেন পোড়ো বাড়ির সমাহার। এখন সেখানে অসামাজিক কাজ হয়, মদের আড্ডা বসে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কুমারগ্রাম ব্লকের অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র বারবিশা শিল্প বিকাশ কেন্দ্রের এমন হাল নিয়ে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ স্থানীয় মানুষজন। তাঁদের অভিযোগ শিল্প বিকাশ কেন্দ্রে শিল্পই যদি না গড়া হবে, তবে কোটি কোটি সরকারি টাকা কেন অপচয় করা হল? দেখভালের অভাবে ঘরের দরজা জানলা, দরজাও চুরি হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কেন্দ্রটি তৈরি করার পরে বামফ্রন্ট পরিচালিত কুমারগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির হাতে সেটির দায়িত্ব তুলে দেয়, জেলা ক্ষুদ্র শিল্প দফতর। চার বছর আগে ওই শিল্প বিকাশ কেন্দ্রটিকে একটি বেসরকারি সংস্থার কাছে লিজ দেয় পঞ্চায়েত সমিতি। বাসিন্দারা তখন আশায় বুক বেঁধেছিলেন, হয়তো শিল্প গড়ে উঠবে। এলাকায় কর্মসংস্থান বাড়বে। কিন্ত সে আশা পূরণ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তাঁরা। সেখানে শিল্প স্থাপনের দাবিতে তাই সরব হয়েছেন তাঁরা।
জেলা শিল্প দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষিত বেকারদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্য নিয়ে, ২০০৬ সালে রাষ্ট্রীয় সমবিকাশ যোজনার অর্থে, দেড় কোটি টাকা খরচ করে কুমারগ্রাম রোডে ১৮ বিঘা জমির উপর বারবিশা শিল্প বিকাশ কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়। ছ’টি শেডে, প্রায় ৫০টি ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপনের মতো পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়। বিদ্যুৎ, পানীয়জল, রাস্তাঘাট, নিকাশিনালা সবই গড়ে তোলা হয়। সেখানে অটোমোবাইল, ধূপকাঠি মোমবাতি, মুদ্রণ, আসবাব পত্র তৈরি, এমন বিভিন্ন শিল্প স্থাপন করার পরিকাঠামো তৈরি রয়েছে। বারবিশা এলাকার ব্যবসায়ী রতন পণ্ডিত বলেন, ‘‘বারবিশায় শিল্প বিকাশ কেন্দ্রে শিল্প হলে এলাকার অর্থনৈতিক চেহারা বদলে যেত। অথচ ১২ বছরে একটিও শিল্প গড়ে তোলা হয়নি। এটা খুব দুঃখজনক ঘটনা।” বারবিশা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কার্তিক সাহা বলেন, ‘‘সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে।’’
তৃণমূল পরিচালিত কুমারগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি বিপ্লব নার্জিনারী জানিয়েছেন, “২০১৪ সালে একটি বেসরকারি শিল্প সংস্থাকে শিল্প বিকাশ কেন্দ্রটি লিজ দেওয়া হয়। তাঁরা সেখানে শিল্প গড়বে এবং ৬০০ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে, এই শর্তেই লিজ় দেওয়া হয়। কিন্তু সেই বেসরকারি শিল্প সংস্থা সেখানে কোনও শিল্প গড়েনি। তবে আমরা সেখানে শিল্প স্থাপনের জন্য আলোচনা করেছি।”
আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল সাংসদ দশরথ তিরকে বলেন, ‘‘বাম আমলে পরিকল্পনাহীনভাবে ওই শিল্প বিকাশ কেন্দ্র গড়ে তোলার নামে সরকারি টাকা অপচয় করা হয়। কেন্দ্রটিকে এখন কী ভাবে কাজে লাগানো যায়, সেটা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy