Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

টাকা বরাদ্দ হলেও সংস্কার হয়নি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের

মাস ছয়েক আগে ইন্ডোর স্টেডিয়াম সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হয়েছে টাকা। অথচ কাজ শুরু হয়নি। ফলে বেহাল পড়ে রয়েছে মালদহ সত্য চৌধুরী ইন্ডোর স্টেডিয়াম। ইন্ডোর স্টেডিয়াম সংস্কার না হওয়ায় বছর খানেক ধরে খেলাধূলাও বন্ধ রয়েছে। এর জন্য জেলা প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন খেলোয়াড়েরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৫ ০২:২৬
Share: Save:

মাস ছয়েক আগে ইন্ডোর স্টেডিয়াম সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হয়েছে টাকা। অথচ কাজ শুরু হয়নি। ফলে বেহাল পড়ে রয়েছে মালদহ সত্য চৌধুরী ইন্ডোর স্টেডিয়াম।

ইন্ডোর স্টেডিয়াম সংস্কার না হওয়ায় বছর খানেক ধরে খেলাধূলাও বন্ধ রয়েছে। এর জন্য জেলা প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন খেলোয়াড়েরা। তাঁদের অভিযোগ, স্টেডিয়ামের পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। বৃষ্টি হলেই জল পড়ে। যার জন্য খেলাধূলা করতেও চরম সমস্যায় পড়তে হয়। বছর খানেক ধরে এখানে তেমন কোনও খেলাই হয় না। ফলে তাঁদের অন্যত্র গিয়ে খেলার প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। তবে প্রশাসনের তরফে খুব শীঘ্রই কাজ শুরু করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

২০০৯ সালে ২২ ডিসেম্বর ইংরেজবাজার শহরে তৈরি হয় এই ইন্ডোর স্টেডিয়াম। এই স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন রাজ্যের ক্রীড়া ও পরিবহণ মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী। টিনের শেড দিয়ে তৈরি হয় স্টেডিয়ামটি। প্রায় হাজার খানেক দর্শকাসন রয়েছে। এই স্টেডিয়ামে একটি জিমখানাও তৈরি করা হয়েছিল খেলোয়াড়দের জন্য। সেটি ব্যবহার না হওয়ায়, মেশিনগুলি অকেজো হয়ে পড়ে।

এই অবস্থায় স্টেডিয়াম সংস্কারের দাবি তোলেন জেলার খেলোয়াড় ও ক্রীড়াপ্রেমী মানুষেরা। তাঁদের দাবি মাথায় রেখে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে রাজ্য ক্রীড়া দফতর স্টেডিয়াম সংস্কারের জন্য ৭০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। ছাদ তৈরি থেকে শুরু করে অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে গোটা স্টেড়িয়াম ঢেলে সাজানোর বন্দোবস্ত করা হয় বলে জানা গিয়েছে। জেলা প্রশাসনের কাছে টাকাও চলে এসেছে। তবে টাকা পড়ে থাকলেও কাজ শুরু করা হয়নি। ফলে পরিকাঠামোগত সমস্যায় ধুঁকছে স্টেডিয়ামটি।

স্টেডিয়ামে টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন, কাবাডি, খো খো ইত্যাদি খেলা হতো। এখন কোনও রকমে ব্যাডমিন্টন খেলা চলে। জেলা ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০ জন টেবিল টেনিস খেলোয়াড় রয়েছেন। ব্যাডমিন্টনে ৫০ জন ছাড়া আরও ৫০ জন অন্য খেলোয়াড় রয়েছেন। স্টেডিয়ামের সমস্যা থাকায় ২০১৩ সালের পর ইন্ডোরে আর কোন প্রতিযোগিতা হয়নি। এমনকী, খেলোয়াড়েরা প্র্যাকটিসও করতে পারেন না।

বৃষ্টি হলেই স্টেডিয়ামের ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। টিনের শেড হওয়ায় প্রচণ্ড গরমে খেলোয়াড়দের খুবই সমস্যায় পড়তে হয়। এই স্টেডিয়ামে সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠান হয়। তাতে বসার জন্য চেয়ার ব্যবহার করা হয়। মেঝেতে কার্পেট না বিছিয়ে চেয়ার রাখার ফলে মেঝের কাঠও নষ্ট হয়ে যেতে বসেছে। দর্শকাসমগুলি বেহাল। খেলোয়াড় এবং দর্শকদের জন্য কোনও শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। খেলোয়াড়দের বিশ্রাম নেওয়ারও কোনও ব্যবস্থা নেই।

ইন্ডোর স্টেডিয়ামের এমন বেহাল অবস্থায় ক্ষুব্ধ জেলার ক্রীড়াপ্রেমীরা। রাজ্য স্পোর্টস কাউন্সিলের সদস্য তথা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য শান্তানু সাহা বলেন, ‘‘পরিকল্পনা ছাড়ায় স্টেডিয়ামটি তৈরি করা হয়েছিল। কোনও বিশেষজ্ঞদের দিয়ে স্টেডিয়াম তৈরি হয়নি। নামে মাত্রই ইন্ডোর স্টেডিয়াম তৈরি হয়েছিল জেলায়। আমরা জেলা প্রশাসনকে বার বার কাজ শুরু করার জন্য অনুরোধ করেছি। একই সঙ্গে স্টেডিয়ামটি যাতে এ বার বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে সংস্কার করা হয়, তার জন্যও আমরা জেলা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছি।’’

টেবিল টেনিস খেলোয়াড় রাজু দাস, রাহুল সরকারেরা বলেন, ‘‘আমরা স্টেডিয়ামে বছর খানেক ধরে প্র্যাকটিস করতে পারছি না। রাতে প্র্যাকটিস করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো নেই। নেই কোনও বিশ্রাম নেওয়ার ব্যবস্থা। বাধ্য হয়েই আমাদের অন্যত্র প্র্যাকটিস করতে হচ্ছে। তাই প্রশাসনের কাছে আমাদের আর্জি, যাতে দ্রুত স্টেডিয়াম সংস্কার করে খেলার যোগ্য করা হয়।’’ মালদহের জেলা শাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী বলেন, ‘‘জেলা পরিষদের মাধ্যমে স্টেডিয়াম সংস্কার করা হবে। খুব শীঘ্রই টেন্ডার ডাকা হবে। আশা করছি চলতি মাসের মধ্যেই সংস্কারের কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE