Advertisement
১০ মে ২০২৪
North Bengal Medical College

‘রিকু’-তে বিভ্রান্তি

তিন জনের শরীরে কিছু না মিললেও সকলকে একই সঙ্গে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তাতে ওই তিন জনকে ছুটি দেওয়া যাবে কি না, তাই নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। তাদের ফের কোয়রান্টিনে থাকা প্রয়োজন বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। 

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২০ ০৫:২৪
Share: Save:

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে করোনার চিকিৎসায় নানা বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত এবং সন্দেহভাজনদের একই সঙ্গে রাখার অভিযোগও উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত কালিম্পঙের বাসিন্দা এক মহিলার মৃত্যু হলে তাঁর পরিবারের এবং সংস্পর্শে আসা ৭ জনকে জলপাইগুড়িতে আইসোলেশনে পাঠায় স্বাস্থ্য দফতর। পরে তাঁদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে এনে রেসপিরেটরি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা রিকু-তে রাখা হয়। তাঁদের চার জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তিন জনের শরীরে কিছু না মিললেও সকলকে একই সঙ্গে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তাতে ওই তিন জনকে ছুটি দেওয়া যাবে কি না, তাই নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। তাদের ফের কোয়রান্টিনে থাকা প্রয়োজন বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা।

এক দিকে মাস্ক, পিপিই, স্যানিটাইজ়ার চাহিদা মতো না-পাওয়া নিয়ে বিভ্রান্ত। অভিযোগ, যে রিকু-তে করোনা আক্রান্তদের রাখা হচ্ছে, সেখানেই সাফাই বন্ধ করে দিয়েছিলেন কর্মীরা। পরে পরিস্থিতি সামলানো হয়। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত, সন্দেহভাজন এবং অন্য রোগীদের আলাদা করে রাখার পরিকল্পিত ব্যবস্থা করতে না পারা নিয়েও বিভ্রান্তি এবং আশঙ্কা, দুই-ই বেড়েছে। হাসপাতাল সুপার কৌশিক সমাজদার জানান, সমস্যা হলে সমস্ত কিছুই গুরুত্ব দিয়ে দেখে সমস্যা মেটানোও হচ্ছে।

শুরুতে মর্গের কাছে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৬টি শয্যা চালু করে করোনা সন্দেহভাজন, আক্রান্তদের রাখা হচ্ছিল। পরে শয্যা বাড়িয়ে ১৫টি করা হয়। সেখানে কালিম্পংয়ের করোনা আক্রান্ত মহিলাকে গোড়ায় রাখা হয়েছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে রিকু-তে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর আইসোলেশন তাঁর শয্যা এবং ওই ঘর সঠিক ভাবে জীবাণুমুক্ত না-করেই রোগী রাখার অভিযোগ উঠেছে। তাতে অন্য রোগীরাও উদ্বেগে ছিলেন। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়াতেও তা জানান আইসোলেশন থেকে ছুটি পেয়ে ফিরে আসা এক ব্যক্তি।

করোনায় আক্রান্তদের জটিল পরিস্থিতিতে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগের দোতলায় গড়ে ওঠা ট্রমা সেন্টারটিকে রিকু-তে বদল করা হয়। সেটিকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থা জটিল হলে চার শয্যার একটি ঘরে রাখা হচ্ছে। সেখানে ভেন্টিলেটর থাকছে। আইসোলেশনের আরও শয্যা দরকার হলে রিকু-র অন্য অংশে আলাদা ঘরে দ্বিতীয় আইসোলেশন ইউনিট চালু করা হয়। এর পাশাপাশি হাসপাতাল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, আক্রান্ত এবং সন্দেহভাজনদের আলাদাই রাখা হচ্ছে। যদিও তা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এদিন কালিম্পং থেকে ওই মহিলার পরিবারের আরও ৬ জন আক্রান্তকে এনে রিকু-তে রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১০ আক্রান্ত এখানে রয়েছেন। ১০টির বেশি শয্যাও নেই। এর পর

আক্রান্ত কেউ এলে তাঁকে কোথায় রাখা হবে, তা নিয়েও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। আবার নীচ তলায় জরুরি বিভাগের একাংশে কোভিড-১৯ স্ক্রিনিং সেন্টার খোলা হয়েছে। কালিম্পংয়ের আক্রান্ত মহিলাকে সেখানেই প্রথম দেখানো হয়েছিল। একই করিডর ব্যবহার করে জরুরি বিভাগ-সহ বিভিন্ন বিভাগের রোগী ও আত্মীয়েরা যাতায়াত করেন। সেটাও ঝুঁকির। তবে ডাক্তাররা আপত্তি তোলায় দু’দিন আগে সেটা অন্যত্র সরানো হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

North Bengal Medical College Lock Down Corona Virus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE