ফাইল চিত্র।
ভোটার কার্ড যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গেই ব্লক অফিসে শিবির করে রেশন কার্ডের যাবতীয় সমস্যা সমাধানের কাজ শুরু হয়েছে। গ্রামে রটে গিয়েছে, নাগরিকপঞ্জি তৈরির কাজেই শুরু হয়েছে রেশন থেকে ভোটার কার্ড যাচাই। আর তাতেই ঘুম থেকে দলে দলে মানুষ ভিড় করছেন প্রশাসনিক দফতরে। কোচবিহারে আচমকা এমন অবস্থায় নাজেহাল হয়ে পড়েছে প্রশাসন।
ধীরগতিতে কাজ চলার অভিযোগেও ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, ২৭ সেপ্টেম্বর রেশন কার্ডের শিবিরের শেষ তারিখ। সেখানে অল্প সংখ্যক কর্মী দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। তাতে সমস্যা মিটছে না। প্রশাসনের তরফে নানাভাবে বাসিন্দাদের বোঝানোর চেষ্টা চলছে, এই কাজের সঙ্গে এনআরসি’র কোনও সম্পর্ক নেই। তাতে কেউই কান দিচ্ছেন না।
জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “রেশন কার্ডের শিবিরে ভিড় হচ্ছে এটা ঠিক। ভোটার তালিকা যাচাইয়ের কাজেও এগোচ্ছে। কারও যাতে অসুবিধে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।” খাদ্য সরবরাহ দফতরের কোচবিহারের জেলা আধিকারিক দাওয়া লামা শেরপা বলেন, “সারা বছর ধরেই রেশন কার্ডের যাবতীয় সমস্যা নিয়ে কাজ করা হয়। এবারে শিবির করে হচ্ছে। প্রত্যেকের সমস্যা সমাধান হবে।” কোচবিহারের মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল ইতিমধ্যে নোটিশ দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, ভোটার তালিকা যাচাইয়ের কাজের সঙ্গে এনআরসির কোনও সম্পর্ক নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “আসলে সাধারণ মানুষের মধ্যে এনআরসি নিয়ে একটি আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। কাউকে বোঝালেও বুঝতে চাইছে না। কে কার আগে কাজ করবে তা নিয়ে হইচই হচ্ছে।”
অসমের নাগরিকপঞ্জি বের হওয়ার পর থেকেই কোচবিহার তথা গোটা উত্তরবঙ্গেই তা নিয়ে একটি অংশের মানুষের আতঙ্ক তৈরি হয়। বিশেষ করে কোচবিহারের কয়েক হাজার মেয়ের বিয়ে হয়েছে অসমে। তাঁদের একটি বড় অংশের নাম এনআরসি তালিকায় নেই। সেই সঙ্গেই রাজবংশী সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদেরও অনেকের নাম অসমের নাগরিকপঞ্জিতে নেই। প্রতিনিয়ত ওই বাসিন্দাদের কাছে বিষয়টি জানতে পেরে বিচলিত হয়ে পড়েন বাসিন্দারা। বহু বাসিন্দাই কলকাতা গিয়ে নথিপত্র সংগ্রহ করেছে। অনেকে আবার নথিপত্রের খোঁজ শুরু করেছে। এই সময়ে এনআরসি চাপানউতোর শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গেও।
এই অবস্থায় ভোটার তালিকা যাচাই এবং নতুন রেশন কার্ডের জন্য আবেদন, ডিজিটাল কার্ড তৈরি, রেশন কার্ডে নাম ভুল, স্থানন্তরিত নিয়েও গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ব্লকে ব্লকে শিবির শুরু করা হয়। তাতেও একটি অংশের বাসিন্দাদের মধ্যে আশঙ্কা দানা বাঁধে। শুক্রবার কোচবিহার এক নম্বর ব্লকে জড়ো হওয়া মর্জিনা বিবি, অঞ্জলি দাস, অনুকূল বর্মণর, বিপুল দে’রা বলেন, “এনআরসি নিয়ে চারদিকে হইচই চলছে। এখন সমস্ত নথি কাছে রাখতে চাই। অসমে যা শুনছি তাতে ভয় হচ্ছে। তাই শিবিরে এসেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy