Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Matigara

ক্ষতিপূরণ চেয়ে তপ্ত মাটিগাড়া

বেআইনি মদ বিক্রির অভিযোগে ধৃত কলাইবক্তারির বাসিন্দা বেচন রায়কে পুলিশ লকআপে পিটিয়ে খুনের অভিযোগে বুধবার থেকেই উত্তাল  ছিল মাটিগাড়া।

ক্ষোভ: বেচন রায়ের মৃত্যুর ঘটনায় চতুর্থ মহানন্দা সেতুর উপর অবরোধ করে বিক্ষোভ পরিবার ও এলাকার বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

ক্ষোভ: বেচন রায়ের মৃত্যুর ঘটনায় চতুর্থ মহানন্দা সেতুর উপর অবরোধ করে বিক্ষোভ পরিবার ও এলাকার বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:০৮
Share: Save:

বেআইনি মদ বিক্রির অভিযোগে ধৃত কলাইবক্তারির বাসিন্দা বেচন রায়কে পুলিশ লকআপে পিটিয়ে খুনের অভিযোগে বুধবার থেকেই উত্তাল ছিল মাটিগাড়া। বৃহস্পতিবারেও দফায় দফায় চলল বিক্ষোভ। এ দিন থানার সামনে বেচনের দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান বেচনের পরিবারের লোকজন ও পড়শিরা। আর তার জেরেই দুপুর পর্যন্ত দেহ ময়নাতদন্তে পাঠাতেই পারেনি পুলিশ। পরে পুলিশের তরফে ‘উপযুক্ত’ তদন্তের আশ্বাস দিলে দেহ ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ দিন বিকেলে ক্ষতিপূরণের দাবিতে কলাইবক্তারি এলাকায় চতুর্থ মহানন্দা সেতুর উপরে টায়ার জ্বালিয়ে দীর্ঘক্ষণ পথ অবরোধ করে ক্ষুব্ধ জনতা। সেখানেই এক পুলিশ আধিকারিকের দিকে জলন্ত টায়ার নিয়ে বেচনের ছেলে তেড়ে যান বলেও অভিযোগ। অল্পের জন্য দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচেন ওই আধিকারিক। এ দিন দেহের সৎকার হয়নি। তবে বিচারবিভাগীয় তদন্তের জন্য পুলিশ আর্জি জানিয়েছে।

এ দিন দুপুরে মাটিগাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন শিলিগুড়ি এসডিও দফতরের কার্যনির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মির্জা তাজউদ্দিন। সেখানে বেচনের ছেলে রাহুলকে এবং স্ত্রী শর্মিলাকে নিয়ে দেহের সুরতহাল করেন তিনি। তবে এ বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে রাহুল বলেন, ‘‘বাবার পিঠ ও কোমরে জমাটবাঁধা রক্তের দাগ ছিল। আর তা থেকেই স্পষ্ট বাবাকে পিটিয়েই মারা হয়েছে। ক্ষতিপূরণ দিতে হবে পুলিশকে।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার বেআইনি মদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানে নেমেছিল পুলিশ। ওই দিন দুপুরে বেচনকে থানায় তুলে আনে পুলিশ। পুলিশের দাবি, বিকেলে লক আপে অসুস্থ হয়ে পড়েন বেচন। তাঁকে মাটিগাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বেচনের স্ত্রী শর্মিলা এ দিনও দাবি করেন, বেচনকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পরে তিনিও থানায় যান এবং পুলিশ তাঁকে বলে বেচনকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য কুড়ি হাজার টাকা ঘুষ লাগবে। টাকা জোগাড় করে থানায় যাওয়ার পরে তিনি জানতে পারেন, বেচন অসুস্থ। পরে মাটিগাড়া হাসপাতালে গিয়ে তিনি জানতে পারেন বেচন মারা গিয়েছেন।

বেচনের স্ত্রী শর্মিলা বলেন, ‘‘স্বামী মদ বিক্রি করত ঠিকই। কিন্তু থানা থেকে প্রায় রোজই ভ্যান আসত। ওরা দুশো, পাঁচশো টাকাও নিয়ে যেত। তার পরেও অভিযানে এলেই ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে। থানার পাশেই মদের ভাটি রয়েছে। পুলিশ সেটা বন্ধ করতে পারছে না।’’

অভিযুক্তকে ছাড়ার জন্য ঘুষ চাওয়া বা বেচনের কাছ থেকে টাকা তোলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। বেচনকে লকআপে মারধরের অভিযোগও মানছেন না পুলিশকর্তারা। তাঁদের দাবি, বেচনকে মারধর করা হয়নি। বেচন অসুস্থ ছিল।

শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পশ্চিম) কুয়ঁর ভূষণ সিংহ বলেন, ‘‘বিভাগীয় তদন্তের বাইরেও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী এসিজেএম আদালতেও চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ এ দিন দুপুরে মাটিগাড়া থানায় যান সিপি ত্রিপুরারি অথর্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Matigara Agitation Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE