Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
National Highway

ঝাঁকুনিতে রক্ষা নেই, সঙ্গী ধুলো

সোমবার জলপাইগুড়ি শহর ছাড়িয়ে তিস্তা সেতু পার হচ্ছিল বাসটি। বেসরকারি সেই বাসে আরও কয়েক জনের সঙ্গে দাঁড়িয়েছিলেন এক  বৃদ্ধা। আচমকা অতিসক্রিয় হয়ে উঠলেন বাসের কন্ডাক্টর।

ধূলিধূসর: এমনই অবস্থা রাস্তার। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

ধূলিধূসর: এমনই অবস্থা রাস্তার। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৩০
Share: Save:

একটার পরে একটা সতর্কবার্তা!

— ‘ঝাঁকুনি শুরু হবে। হাতল শক্ত করে ধরুন।’

— ‘সবাই এ বার জানলার কাচ তুলে দিন।’

নিত্যযাত্রীরা অবশ্য এ সব বার্তার সঙ্গে পরিচিত। কিন্তু যাঁরা বাসে প্রথম উঠছেন তাঁরা এ সব শুনে রীতিমতো চমকে উঠছেন। তার পরে ঝাঁকুনি ও ধুলো ঝড়ের বহরে তাঁরাও বুঝে যাচ্ছেন রাস্তার হাল!

সোমবার জলপাইগুড়ি শহর ছাড়িয়ে তিস্তা সেতু পার হচ্ছিল বাসটি। বেসরকারি সেই বাসে আরও কয়েক জনের সঙ্গে দাঁড়িয়েছিলেন এক বৃদ্ধা। আচমকা অতিসক্রিয় হয়ে উঠলেন বাসের কন্ডাক্টর। এক যাত্রীকে অনুরোধ-উপরোধ করে আসন থেকে তুলে দিয়ে সেখানে বৃদ্ধাকে বসিয়ে কনডাক্টর বললেন, “ঠাকুমা, হাতল চেপে ধরো, ঝাঁকুনি শুরু হবে এ বার।”

ঝাঁকুনিরও যে এত রকম আছে কে জানত! হালকা, মাঝারি, শক্তিশালী সব ঝাঁকুনি পেরিয়ে বাস পৌঁছল ময়নাগুড়িতে। তার পরেও রক্ষে নেই! ময়নাগুড়ি থেকে ধূপগুড়ির দিকে এগোতেই কনডাক্টর চেঁচিয়ে বললেন, “এ বার জানলার কাচ তুলে দিন।”

পূর্ব-পশ্চিম মহাসড়কের অর্ন্তগত জাতীয় সড়কের জলপাইগুড়ি থেকে ধূপগুড়ি পর্যন্ত নিত্যযাত্রীদের এ ভাবেই যাতায়াত করতে হয়। কন্ডাক্টরের সর্তকবার্তা শুনে আগন্তুককে বিস্মিত হতে দেখে সহযাত্রীর সরস মন্তব্য, “কী, বাস না বিমান, বুঝতে পারছেন না, তাই তো! বিমানে যেমন সিটবেল্ট বাঁধতে বলা হয় জলপাইগুড়ি-ধূপগুড়ির বাসেও তেমনই বলা হয়— হাতল শক্ত করে ধরতে। বিমানের মতোও এই রুটের বাসের চাকার নীচে রাস্তা বেশি থাকে না।”

আর ধুলো ঝড়ের সৌজন্যে রাস্তার দু’পাশে গাছের পাতা, টিনের চাল, বাড়ির দেওয়াল, খেতের ফসল সব ধূসর। জাতীয় সড়ক লাগোয়া বাসিন্দাদের দাবি, শ্বাসকষ্টের মতো রোগ বাড়ছে এলাকায়।

টেকাটুলির কাছাকাছি আসতেই একটা বড়সড় ঝাঁকুনি। পিছনের আসনের যাত্রীদের কারও মাথা ঠুকে গেল বাসের ছাদে। কারও মাথা ঠুকে গেল সামনের আসন কিংবা জানলায়। তার মধ্যেই বাস এক দিকে কাত হয়ে গেল। কী ব্যাপার?

উত্তর এল— ফুট পাঁচেকের গর্ত। বাস সোজা হলে সকলে হাঁফ ছাড়লেন।

এ বার শুরু হল এবড়োখেবড়ো রাস্তা। হাতির মতো বাসও চলল দুলকি চালে। ডানপাশে তখন বিস্তৃত চাষের খেত। সেখানেই গত বছর সভা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানেই দাবি করা হয়েছিল, দ্রুত উত্তরবঙ্গের জাতীয় সড়কে সুদিন আসতে চলেছে।

কিন্তু ‘সুদিন’ও কি এ পথে আসতে পারবে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

National Highway Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE