Advertisement
১১ মে ২০২৪

তোমার দেখা নাই রে...

পশ্চিমবঙ্গ চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের সদস্য সচিব বিনোদ যাদব বলেন, ‘‘প্রচুর খোঁজার পরেও চিতাবাঘটির সন্ধান মেলেনি। তল্লাশি অভিযান জারি থাকবে।

সচিন উদ্ধারে ব্যবহৃত খাঁচাগুলির একটি।

সচিন উদ্ধারে ব্যবহৃত খাঁচাগুলির একটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৩
Share: Save:

সারি দিয়ে গাড়ি, জিপ নিয়ে শতাধিক বনকর্মী তো ছিলেনই। সঙ্গে জুড়েছিল চারটি প্রশিক্ষিত কুনকি হাতিও। বৃহস্পতিবার খোঁজা হয় দু’টি ড্রোন দিয়েও। এত কিছুর পরেও ৮৪ ঘণ্টা পরেও অধরা সচিন। তাই চিতাবাঘটি আদৌ বেঙ্গল সাফারি পার্কের এলাকার মধ্যে রয়েছে, না কি সিঙ্গিঝোরা পার সুকনা লাগোয়া মহানন্দা অভয়ারণ্যের বিস্তীর্ণ জঙ্গলে ঢুকে পড়েছে, তা নিয়েই এখন ধন্ধে বনকর্তারা। কারণ, গত তিন দিন ধরে ২৯৭ হেক্টরের পার্ক তন্নতন্ন করে খুঁজেও সচিনের টিকির নাগাল মেলেনি। বরং পার্কের বাইরে সিঙ্গিঝোরার কাছে পায়ের চিহ্ন মেলায় সচিন বাইরের দিকে যেতে পারে বলে অনুমান করা শুরু হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের সদস্য সচিব বিনোদ যাদব বলেন, ‘‘প্রচুর খোঁজার পরেও চিতাবাঘটির সন্ধান মেলেনি। তল্লাশি অভিযান জারি থাকবে। সিঙ্গিঝোরা-সহ যে তিনটি এলাকায় পায়ের চিহ্ন দেখা গিয়েছে, সেখানেও ফাঁদ পাতা হচ্ছে।’’

এনক্লোজারের লোহার বেড়া টপকে চিতাবাঘ সচিন নিখোঁজ ১ জানুয়ারি থেকে। তার পর থেকে চলেছে বিরামহীন তল্লাশি। তবে তাতে বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি বনকর্তারা। গত তিন দিন থেকে অন্তত চার জন ঘুমপাড়ানি গুলি বিশেষজ্ঞ-সহ শতাধিক বনকর্মী তল্লাশি অভিযানে রয়েছেন। হাতি, ড্রোনও নেমেছে। তাতেও দেখা নেই সচিনের।

সাফারির এলাকাটি মহানন্দা অভয়ারণ্যের মধ্যে। এর শেষ প্রান্ত থেকে অভয়ারণ্যের সুকনা এবং কার্শিয়াঙের গভীর বনাঞ্চল শুরু হয়েছে। পার্কের উল্টো দিকে বৈকুণ্ঠপুরের জঙ্গল সেবক অবধি বিস্তৃত। বন দফতরের কয়েক জন প্রবীণ অফিসার জানান, এখন আশেপাশের জঙ্গলেও তল্লাশি শুরু করাটা দরকার।

বৃহস্পতিবার সারাদিনই তৃণভোজী সাফারির উপরে চক্কর কেটেছে দু’টি ড্রোন। ফাটানো হয় চকলেট বোমও। পরে এই একই পদ্ধতিতে পার্কের অন্য প্রান্তেও তল্লাশি চলে। তবে কোনও সাফল্য মেলেনি। বরং সিঙ্গিঝোরার দিকে পায়ের চিহ্ন মেলায় চিন্তায় পড়ে যান এলাকার মানুষ। সাফারি পার্কের পাশেই রয়েছে জনবসতি। সিঙ্গিঝোরা, তুরিবাড়ি, ডিমডিমার মতো এলাকায় চিতাবাঘের আতঙ্ক ছড়ায়।

তুড়িবাড়ির বাসিন্দা মনোজ রাই বলেন, ‘‘চিতাবাঘ আগেও বেরিয়েছে এলাকায়। তা হলেও চিন্তা তো থাকবেই।’’ রাতের পর থেকে এলাকায় মানুষ বেশি বার হচ্ছে না। ভয়, অন্ধকারে যদি ঘাড়ের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে চিতাবাঘা!

বনকর্তারা অবশ্য বলছেন, এখনই হাল ছাড়া হবে না। এর পরে গভীর জঙ্গলেও তল্লাশি চালানো হবে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবারও পার্কে ভালই ভিড় হয়েছিল। সুরক্ষিত গাড়িতে চাপিয়ে তাঁদের ঘোরানোও হয়েছে। যদি সচিনকে দেখা যায়, এই কৌতূহলও ছিল তাঁদের মধ্যে। কিন্তু দিনের শেষে তাঁদেরও হতাশ করেছে সচিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Wildlife Leopard Searching Forest deaprtment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE