সন্তোষ বর্মন
সাত সকালে শাকের খেতে জল দিতে গিয়ে বন্ধুর হাতে খুন হলেন এসএফআই-র ফাঁসিদেওয়া ব্লকের শাখা সভাপতি সন্তোষ বর্মন (২৫)। মঙ্গলবার সকালে ফাঁসিদেওয়া থানার রূপণদিঘি এলাকার একটি ক্যানেলের ধারের ঘটনা। লোকজন গিয়ে অভিযুক্তকে ধরে একটি গাছে বেঁধে ফেলে। তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সন্তোষবাবুর বাড়ি ওই এলাকাতেই। অভিযুক্তের নাম প্রবীণ রায়। তিনি কুড়়ুল দিয়ে সন্তোষবাবুর মাথায় আঘাত করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রবীণবাবু মাস ছ’য়েক ধরে কোনও কারণে অবসাদে ভুগছিলেন। তাঁর দাদা সুপেনবাবু বলেন, ‘‘ভাইয়ের শরীর ভাল না থাকায় চিকিৎসককে দেখানো হয়েছে। কেন এমন করল জানি না।’’ প্রবীণবাবু থানায় দাঁড়িয়ে খুনের কথা কবুল করেছেন। তবে কেন খুন করেছেন জানতে চাইলে অসংলগ্ন কথা বলেছেন।
শিলিগুড়ির বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য এলাকায় যান। তিনি বলেন, ‘‘সন্তোষ ফাঁসিদেওয়া পঞ্চায়েত নিবার্চনে সক্রিয় ভাবে ভোট পরিচালনা করেছেন। অপূরণীয় ক্ষতি হল। অভিযুক্ত ছেলেটিও এক সময় আমাদের সংগঠন করত। এখন একটু অসংলগ্ন আচরণ করত বলে বলে শুনেছি। কেন খুন, তা আরও পরিষ্কার হওয়া দরকার।’’ দুপুরে ফাঁসিদেওয়া থানায় সিপিএমের তরফে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে। দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘কী কারণে খুন হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’
বছর চারেক আগে সন্তোষবাবু বাগডোগরা কলেজে থেকে বিএ পাশ করেন। বছর দেড়েক আগে এলাকারই বাসিন্দা নিয়তি বর্মনকে বিয়ে করেন। তাঁদের ন’মাসের শিশুপুত্র রয়েছে। বাবার ৮ বিঘা জমিতে কৃষিকাজ করেই সংসার চালান। প্রতিবেশী প্রবীণ সন্তোষের স্কুলের বন্ধু। বিয়ের পর সন্তোষ জমিজমা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। প্রবীণও দুই দাদার সঙ্গে টুকটাক চাষবাস করতেন। আগের মতো দুই বন্ধুকে খুব বেশি আর এক সঙ্গে দেখা যেত না।
সন্তোষের বাবা প্রেমানন্দবাবু বলেন, ‘‘সকাল ৭টায় পাম্প নিয়ে জমিতে রেখে আসি। একটু পরেই সন্তোষ ক্যানেলের জলে পাইপ বসাতে যায়। হঠাৎ প্রবীণ গিয়ে কুড়ুল নিয়ে চড়াও হন।’’ শুনেই ঘনঘন জ্ঞান হারাচ্ছেন নিয়তিদেবী ও সন্তোষের মা আরতিদেবী। অভিযুক্তের ফাঁসি চান নিয়তিদেবী। প্রবীণের বৃদ্ধা মা দেবারিদেবীও উদ্বেগ চিন্তায় অস্থির। তিনি বলেন, ‘‘ছেলেটা কেন এমন করল, কে জানে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy