থমকে: মালদহ টাউন স্টেশনে দুর্ভোগে যাত্রীরা। ছবি: তথাগত সেন শৰ্মা।
সোমবার সকালে ঠিক সময়েই মালদহ টাউন স্টেশনে পৌঁছে যান গাজোলের বাসিন্দা কৌশিক দে। সকাল ৮টা ৩৫-এ স্টেশনে ঢোকার কথা শতাব্দী এক্সপ্রেসের। সময়ের কিছুক্ষণ আগেই স্টেশনে পৌঁছন ইংরেজবাজারের বাসিন্দা বাবলি বর্মন। শেষ পর্যন্ত ট্রেন পৌঁছয় বিকেল ৪টে ২১ মিনিটে। প্রায় আট ঘণ্টা পর। ট্রেন আসার পর বাবলি বলেন, “ট্রেনে উঠলাম ঠিকই। তবে কাজ আর হল না। আজই দুপুর আড়াইটে নাগাদ দমদম থেকে বিমানে চেন্নাই যাওয়ার কথা ছিল। আর্থিক ক্ষতির সঙ্গে যথেষ্ট হয়রানিও হল।”
শুধু বাবলিই নন, এদিন আদিবাসী সংগঠনের রেল আন্দোলনের জেরে দুর্ভোগের মুখে পড়েন ওই ট্রেনের সমস্ত যাত্রীই। তাঁরা জানান, দিনের বেলা উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গে যোগাযোগের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন হল শতাব্দী। অন্য ট্রেনের চেয়ে এই ট্রেনে সময় খুবই কম লাগে। এ ছাড়া, ট্রেনটির প্রতিটি কামরা বাতানুকূল। ফলে উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ যাত্রীই পছন্দের ট্রেন শতাব্দী এক্সপ্রেস।
রেল সূত্রের খবর, এদিন সকাল সাডে় ৫টা নাগাদ যথাসময়েই নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে শতাব্দী ছেড়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিক হিসেবে মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যেই ট্রেনটি মালদহ টাউন স্টেশনে পৌঁছনোর কথা। কিন্তু বাদ সাধে আদিবাসীদের অবরোধ। এদিন সাতসকালেই গাজোলের আদিনা স্টেশন রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় আদিবাসী সংগঠনগুলি। সকাল ৬টা থেকে তির-ধনুক নিয়ে স্টেশনে হাজির হয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। এর জেরে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্টেশনে আটকে যায় একাধিক এক্সপ্রেস ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহারের বারসই স্টেশনে মাত্র ১০ মিনিট বিলম্বে ছিল শতাব্দী এক্সপ্রেস। তবে এরপর হরিশ্চন্দ্রপুরের কুমেদপুর স্টেশনে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আটকে থাকে ট্রেনটি। পরে ধীর গতিতে ট্রেনটি পৌঁছয় সামসি স্টেশনে। সেখানেও ঘণ্টাদুয়েক আটকে থাকে শতাব্দী এক্সপ্রেস। তার পরে গাজোলের একলাখিতেও ঘণ্টাখানেক আটকে থাকে ট্রেনটি।
শতাব্দী আটকে থাকায় বিপাকে পড়েন ওই ট্রেনের যাত্রীরা। ওই ট্রেনের যাত্রী পিন্টু সরকার বলেন, “শতাব্দী এক্সপ্রেসে খাবার, জল পর্যাপ্ত মজুত থাকে ঠিকই। তবে এ দিন সাড়ে সাত ঘণ্টা দেরিতে চলায় দিনভর ট্রেনেই কাটাতে হল।” উত্তরবঙ্গ ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “উত্তরবঙ্গের বহু ব্যবসায়ী শতাব্দী এক্সপ্রেসে করে কলকাতায় কাজে যান। এদিন কোনও কাজই হয়নি বহু ব্যবসায়ীর। অনেকে আমাকে ফোনে বিষয়টি নিয়ে জানিয়েছিলেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy