ফাঁদ: লাইট ট্র্যাপ যন্ত্র। নিজস্ব চিত্র
পুর এলাকায় ডেঙ্গি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ‘লাইট ট্র্যাপ’ বা আলোক ফাঁদ যন্ত্র বসালো স্বাস্থ্য দফতর। মঙ্গলবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে শিলিগুড়ি পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি নির্দিষ্ট জায়গায় ওই যন্ত্র বসানো হয়। দফতর সূত্রে জানান হয়েছে, রাতভর ওই যন্ত্রে যে সমস্ত মশা ধরা পড়বে সেগুলি নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে স্বাস্থ্য দফতর।
এছাড়া, আগের দিন বিভিন্ন জায়গা থেকে মশার লার্ভাও সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো পালন করে পূর্ণাঙ্গ মশা হবে। তারপরে সেগুলো ব্যবচ্ছেদ করে পরীক্ষা করা হবে। ডেঙ্গির প্রতিরোধী কাজ চললেও স্বাস্থ্য দফতরের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে একটি বিশেষ প্রজাতির এডিস মশার সংখ্যা বৃদ্ধি। সেই প্রজাতির নাম এডিস অ্যালবোপিটাস। এডিসেরই আর একটি প্রজাতি হল এডিস ইজিপ্টাই। দু’টি মশাই ডেঙ্গির বাহক। দফতরের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, শীত পড়লেই এডিস ইজিপ্টাই মশার সংখ্যা কমে আসে। কারণ সেই সময় লার্ভাগুলো ফোটার মতো তাপমাত্রা পায় না। কিন্তু এডিস অ্যালবোপিটাস প্রজাতি মশার জীবনচক্র ঠান্ডার মধ্যেও সক্রিয় থাকে। সেই প্রজাতির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপদের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে শিলিগুড়ি শহরে এডিস ইজিপ্টাই প্রজাতির মশা বেশি ছিল। অ্যালবোপিটাস সাধারণত গ্রামের দিকে কিছু সংখ্যায় দেখা যেত। গত এক বছরে শহরে এডিস ইজিপ্টাইয়ের বদলে অ্যালবোপিটাসের সংখ্যা বেড়েছে। দার্জিলিং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘এখন সেই কারণেই সারাবছর ধরে নজরদারির কথা বলা হচ্ছে। শীতের সময়েও কিছু ক্ষেত্রে ডেঙ্গির সংক্রমণ গত বছর ঘটেছিল। বিষয়টি নজরে রাখা হয়েছে।’’
মঙ্গলবার ২১ এবং ২ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি প্রতিরোধে সচেনতা র্যালি করা হয় পুরসভার উদ্যোগে। মেয়র অশোক ভট্টাচার্য নিজে উপস্থিত থেকে লিফলেট বিলি করেন। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ২ নম্বর ওয়ার্ডে পতঙ্গবিদদের দল পাঠিয়ে সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। অন্তত ১৫টি দল ওই ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে মশার লার্ভা সংগ্রহ করেছে। ‘লাইট ট্রাপ’ যন্ত্র বসানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। ওই এলাকায় ডেঙ্গি মশার ঘনত্ব মাপা হচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যেই সমীক্ষার বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
শীত পড়লেই ডেঙ্গির প্রকোপ কমে, এই ধারণা থেকে সরে আসতে চাইছে পুরসভাও। শীতের সময়েও ডেঙ্গি প্রভাব প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে পুর কর্তৃপক্ষ। মেয়র বলেন, ‘‘আবহাওয়ার পরিবর্তনে এ বছর এই সময় বৃষ্টির জেরেই মশা বেড়েছে। গত নভেম্বরে শীতের মধ্যেও ডেঙ্গি কয়েকটি জায়গায় হয়েছিল। তাই এ বার শীতেও ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ চালানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy