জমায়েত: মেলায় হাজির বিশেষ চাহিদাসম্পন্নেরা। নিজস্ব চিত্র
কাজের আশায় ব্লকের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ‘জবকার্ড মেলা’য় এসেও কার্যত কিছুটা হতাশা নিয়েই বাড়ির পথে ধরলেন জেলার বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শ’সাতেক মানুষ।
মঙ্গলবার ইংরেজবাজারে।
অনেকেই জানান, ব্লক প্রশাসন আয়োজিত ওই মেলায় জবকার্ড পেলে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বছরে অন্তত ১০০ দিন কাজ পাবেন বলে ভেবেছিলেন। সেই মজুরির টাকায় সংসারে কিছুটা হলেও সাহায্য করার আশায় ছিলেন সকলে।
কিন্তু এ দিন মেলার উদ্বোধনে জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের বছরে কমপক্ষে ২০ দিন করে কাজ দেওয়ার কথা বলায় কার্যত হতাশ তাঁরা ও তাঁদের পরিজনেরা।
মেলায় হাজির কাজিগ্রাম মোমিনপাড়ার বাবু মিয়াঁ বলেন, ‘‘আমি হাঁটতে-চলতে পারি না। একটি সংস্থার দেওয়া ট্রাইসাইকেল নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালাই। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে জবকার্ড ছিল না। কার্ড পেলে কাজ মিলবে সেই আশায় মেলায় এসেছিলাম। কিন্তু মাত্র কুড়ি দিন কাজ পাব এমন কথায় হতাশ হয়েছি।’’ অমৃতির রায়গ্রামের চন্দ্রমোহন মণ্ডল বলেন, ‘‘দু’পা অসাড়। ট্রাইসাইকেল নিয়ে লটারির টিকিট বিক্রি করে সংসার চলে। অনেক আশায় জবকার্ড মেলায় এসেছিলাম। কিন্তু কার্যত হতাশ হয়েই ফিরতে হচ্ছে।’’
তবে জেলাশাসক বলেন, ‘‘বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের ১০০ দিনের প্রকল্পে বেশি কায়িক শ্রম রয়েছে এমন কাজ দেওয়া যাবে না। ক্রেস ও জল দেওয়ার দায়িত্বে তাঁদের রাখা হবে। যাতে বছরে অন্তত তাঁরা কুড়ি দিন পায় তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। তবে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি আরও বেশি কাজও তাঁদের দিতে পারে।’’
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলার ১৫টি ব্লকে ১৮ বছরের উপরে যে সব বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষ রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে জবকার্ড বিলি করে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওই প্রকল্পে কাজ চলাকালীন অনেক মহিলা তাঁদের শিশুদের সেখানে নিয়ে আসেন। সেই বাচ্চাদের রাখার জন্য ক্রেসের ব্যবস্থা থাকে। জবকার্ডধারী বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা সেই শিশুদের দেখভাল করবেন। শুধু তাই নয়, কাজ চলাকালীন শ্রমিকদের জন্য জল রাখার নিয়ম রয়েছে। জল দেওয়ার কাজও করবেন তাঁরা। মূলত কায়িক শ্রম একেবারেই কম রয়েছে, এমন কাজই তাঁদের দেওয়া হবে।
প্রশাসনের বক্তব্য, তাতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্নরা সমাজের আর পাঁচ জনের মতো ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ করে মজুরি পাবেন এবং স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা করবেন। জেলা প্রশাসনের দাবি, বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জীবিকা সুনিশ্চিত করতে এমন উদ্যোগ রাজ্যে এই প্রথম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy