Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
সচিন পালানোর জের

রাজ্যের নোট সেন্ট্রাল জু অথরিটিকে

বন প্রশাসনের অন্দরের খবর, ওই ‘নোট’ পাঠানোর আগে পুরো বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের রিপোর্ট খতিয়ে দেখে নিতে চাইছেন বনকর্তারা। ইতিমধ্যে বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ ওই ব্যাপারে রিপোর্ট তলব করেছেন।

সন্ধান: পলাতক চিতাবাঘ সচিনের খোঁজে বৃহস্পতিবার কুনকি-হাতির পিঠে চড়ে চলেছেন বনকর্মীরা। এ দিন চিতাবাঘ খুঁজতে ওড়ানো হয় ড্রোনও। তবে সচিনের খোঁজ মেলেনি। নিজস্ব চিত্র

সন্ধান: পলাতক চিতাবাঘ সচিনের খোঁজে বৃহস্পতিবার কুনকি-হাতির পিঠে চড়ে চলেছেন বনকর্মীরা। এ দিন চিতাবাঘ খুঁজতে ওড়ানো হয় ড্রোনও। তবে সচিনের খোঁজ মেলেনি। নিজস্ব চিত্র

অরিন্দম সাহা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:১০
Share: Save:

সচিন-কাণ্ডের জেরে পরিকাঠামোর খামতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় সেন্ট্রাল জু অথরিটিকে ‘নোট’ পাঠানোর কথা ভাবছে রাজ্য বন দফতর। বন দফতর সূত্রের দাবি, শিলিগুড়ির কাছে বেঙ্গল সাফারি পার্কের পরিকাঠামো তৈরির কাজ সেন্ট্রাল জু অথরিটির নির্দেশিকা মেনেও করা হয়েছে। এমনকী ওই পার্কের ছাড়পত্র দেওয়ার আগে ওই জু অথরিটির প্রতিনিধিরা সরেজমিনে এলাকা ঘুরেও দেখেছেন। তাই পরিকাঠামো নিয়ে কোনও খামতি থাকলে তা জানিয়ে ‘নোট’ দেওয়ার কথা মাথায় রাখতে হচ্ছে। বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “সেন্ট্রাল জু অথরিটির পরামর্শ ছাড়া তো আমরা কিছু করিনি। তাই সবকিছু খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে ওদের নোট পাঠানোর কথা মাথায় রাখছি।”

বন প্রশাসনের অন্দরের খবর, ওই ‘নোট’ পাঠানোর আগে পুরো বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের রিপোর্ট খতিয়ে দেখে নিতে চাইছেন বনকর্তারা। ইতিমধ্যে বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ ওই ব্যাপারে রিপোর্ট তলব করেছেন। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের সদস্য সচিব বিনোদকুমার যাদবের সঙ্গেও বিস্তারিত আলোচনা করে নিতে চান বনমন্ত্রী। বিনয়বাবু বলেন, “এখন আমাদের প্রথম লক্ষ্য চিতাবাঘটিকে খুঁজে বের করা। সেই চেষ্টায় যাতে কোনও রকম খামতি না থাকে সেজন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাজ্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের রিপোর্ট দেখে, সদস্য সচিবের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ হবে।”

বন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, বেঙ্গল সাফারির বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এলাকায় বন্যপ্রাণীদের বিচরণভূমি রয়েছে। ওই এলাকার বাইরে প্রায় ১২ ফুট উঁচু লোহার বেড়া রয়েছে। ওই বেড়া টপকেই লাফিয়ে দক্ষিণ খয়েরবাড়ি পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রাক্তন আবাসিক সচিন নামের ওই চিতাবাঘটি পালিয়েছে। মঙ্গলবার সচিনের বেপাত্তা হয়ে যাওয়ার পর থেকে টানা তল্লাশিও শুরু হয়েছে। ওই ঘটনার জেরেই বেঙ্গল সাফারির পরিকাঠামো থেকে নজরদারির মত নানা বিষয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ন্যাসগ্রুপের সম্পাদক অরূপ গুহ বলেন, “সাধারণভাবে চিতাবাঘের আবাস স্থলের ঘেরাটোপের উচ্চতা ১৬-২০ ফুট হলে নিরাপত্তার দিক দিয়ে ভাল হয়। বেড়ার ভিতরের চারিদিকে পরিখা করে জলের ব্যবস্থা বা ওয়াটার ক্যানাল রাখা হলে আরও ভাল হয়। বেঙ্গল সাফারিতে এ সব ভাল করে দেখে নিরাপত্তা নিশ্চিদ্র করা দরকার।” ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “যে তরফেই হোক না কেন, কোনও ত্রুটি থাকলে, সে সব খতিয়ে দেখে শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।”

পরিবেশপ্রেমীদের একাংশ জানাচ্ছেন, বেঙ্গল সাফারিতে লোহার বেড়া ১২ ফুট উচ্চতার ছিল। বেড়ার কাছে উঁচু গাছ থাকারও কথা নয়। তারপরেও কী করে গাছ বেয়ে উঠে পালানোর দাবি করা হচ্ছে। এ সবের জেরেও পরিকাঠামোর ব্যাপারে প্রশ্ন উঠছে। বন দফতর জানাচ্ছে, সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এক বনকর্তার কথায়, কী করে চিতাবাঘটি বেরিয়ে গেল সেই ‘খামতি’ চিহ্নিত করেও মেটানো দরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE