চায়ের পেয়ালাকে কীটনাশকমুক্ত করতে কড়া হল পর্ষদ। বাগান ছোট হোক বা বড়, ক্ষতিকারক কীটনাশক রয়েছে কি না তা জানতে বাধ্যতামূলক ভাবে চা পাতার নমুনা পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে চা পর্ষদ। নমুনায় ক্ষতিকারক কীটনাশকের উপস্থিতি মিললে সেই মরসুমের জন্য ওই চা বাগানের পাতা বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও পর্ষদ সূত্রের খবর।
চা পাতায় কীটনাশকের পরিমাণ বেড়েই চলেছে বলে গত কয়েক বছর ধরেই চা পর্ষদ উদ্বেগ প্রকাশ করে চলছিল। মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন দেশে চা রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। মার্কিন মুলুক-সহ জাপান, রাশিয়া, কানাডার মতো দেশ ভারতের চা থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করে বলে চা পর্ষদের রিপোর্টে জানানো হয়। ইংল্যান্ডে পাঠানো চায়ের নমুনা পরীক্ষা করে ১২টি ক্ষতিকারক কীটনাশকের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি মিলেছিল। কীটনাশকের জেরে চায়ের বিদেশ যাত্রা আটকে গেলেও দেশিয় বাজারে অবাধে বিক্রি চলছিল বলে দাবি পর্ষদের।
১৭টি কীটনাশক নিষিদ্ধ বলে উল্লেখ্য করেছে চা পর্ষদ। নমুনা পরীক্ষার জন্য চা গবেষণা কেন্দ্র ছাড়াও একটি সংস্থাকে ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। ওই সংস্থা বাগানে নিয়ে নমুনা সংগ্রহ করবে। পর্ষদ এবং বাগান কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতেই নমুনা সংগ্রহ হবে। এখানেও কড়াকড়ি রয়েছে। কেবল বাগান কর্তৃপক্ষের সংগ্রহ করে রাখা নমুনাই নয়, বাগানের সব অংশ ঘুরে বিভিন্ন জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হবে। ডুয়ার্স, তরাই, দার্জিলিং এবং অসমের চা বাগানগুলির পাতা প্রতি ৬ মাস অন্তর পরীক্ষা করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাঝেমধ্যে চা পর্ষদ থেকে আচমকা বাগানে পরিদর্শন চালিয়ে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হবে বলেও ই-মেল পাঠিয়ে বিভিন্ন চা বাগান কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে পর্ষদ। শুক্রবার পর্ষদের তরফে মেল করা শুরু হয়েছে। চলতি মাস থেকেই নমুনা সংগ্রহ শুরু হবে।
চা পর্ষদের উত্তরবঙ্গের উপ অধিকর্তা রামেশ্বর কুজুর বলেন, ‘‘পর্ষদের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারকরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা সে কথা সকলকে জানিয়েও দিয়েছি।’’ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে চা মালিক সংগঠনগুলি। ক্ষুদ্র চা চাষিদের সংগঠনের তরফে বিজয়গোপাল চক্রবর্তী জানান, ‘‘এর ফলে চা পাতার মান বাড়বে। চা পিপাসুদের স্বাস্থ্যেও ক্ষতির আশঙ্কা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy