Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
BJP

মমতার অপেক্ষায় সেতু

বিজেপির অবশ্য দাবি, লোকসভায় হেরে কোণঠাসা তৃণমূল ওই সেতু উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রীকে এনে এনে দিনহাটা, সিতাই এবং শীতলখুচি বিধানসভায় নিজেদের শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে।

নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব চিত্র।

সুমন মণ্ডল
দিনহাটা শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২০ ০৯:৪১
Share: Save:

কাজ বলতে গেলে শেষ। দুই-চারটি গাড়িও যাতায়াত করছে রোজ। তবুও উদ্বোধন হয়নি সেতুর। প্রশাসন থেকে শাসকদল, সকলেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অপেক্ষায়। প্রশাসনিক সূত্রে বলা হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সঙ্কেত পেলেই ওই সেতুর উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হবে। সে কথা অস্বীকার করেননি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে এই সেতুর জন্য ১২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে চাইছেন সবাই। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। আমরা অপেক্ষায় আছি।’’

বিজেপির অবশ্য দাবি, লোকসভায় হেরে কোণঠাসা তৃণমূল ওই সেতু উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রীকে এনে এনে দিনহাটা, সিতাই এবং শীতলখুচি বিধানসভায় নিজেদের শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে। বিজেপির কোচবিহার জেলার সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে এনেও লাভ হবে না। যে ভাবে দুর্নীতি এবং মানুষের উপরে অত্যাচারে তৃণমূল জড়িত, তাতে তাদের কথা কেউ বিশ্বাস করে না।’’

তবে শাসক ও বিরোধী, সকলেই মনে করে, সিংগিমারি নদীর উপরে নতুন তৈরি হওয়া এই সেতুর প্রভাব ব্যাপক ভাবে পড়বে ওই তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপরে। স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে এই সেতু নির্মাণে কেউ উদ্যোগী হননি। দিনহাটা মহকুমার অংশ হয়েও বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো ছিল সিতাই। বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত চলত দীর্ঘ দিন ধরে। বর্ষা ভরসা ভুটভুটি। প্রশাসনেরও অনেকে মনে করছেন, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সিতাই এবং দিনহাটার অর্থনৈতিক অবস্থাতেও এই সেতুর প্রভাব পড়বে।

রাজনৈতিক ভাবেও এই সেতুর গুরুত্ব যথেষ্ট। লোকসভা ভোটে কোচবিহারের ৯টি বিধানসভার মধ্যে মাত্র দু’টিতে এগিয়ে ছিল তৃণমূল, সিতাই ও শীতলখুচি। এর মধ্যে সিতাইয়ে তাদের লিড ছিল ৩৭ হাজারের বেশি। তাতেও অবশ্য শেষরক্ষা হয়নি। কোচবিহার লোকসভা আসনটিতে জিতেছিল বিজেপি। সেই ধাক্কা সামলে এ বারে উন্নয়নের কথা তুলতে চাইছে তৃণমূল। তাই সেতু উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রীকে চাইছেন তাঁরা।

সিংগিমারি নদীর উপরে সাগরদিঘির ঘাটে তৈরি হওয়া এই সেতুকে স্থানীয় বাসিন্দারা অনেকেই কোচবিহারের হোয়াং হো বলেন। তাঁদের যুক্তি, চিনের বিখ্যাত নদীটির মতো এই নদীও সিতাইয়ের মানুষকে অনেক বার কাঁদিয়েছে। সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া অবশ্য জানাচ্ছেন, এখনও সেতুর কাজ কিছুটা বাকি রয়েছে। তাঁর কথায়, কিছু জায়গায় ব্ল্যাকটপের কাজ বাকি আছে। জগদীশ বলেন, ‘‘সে তো সামান্য কাজ। শেষ হয়ে যাবে। তবে চেষ্টা করা হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীকে এনে সিংগিমারি সেতু উদ্বোধন করানোর।’’ ২০১২ সালে সেতুর কাজ শুরু হয়। ২০১৬ সালের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। যদি কাজ শেষ হতে ২০২০ হয়ে যায়। বামেরা অবশ্য দাবি করেন, ওই সেতুর নির্মাণের উদ্যোগ বাম আমলেই নেওয়া হয়। তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী শিলান্যাস করেছিলেন সেতুর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC North Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE