এমন খাতা দেখেই চোখ কপালে শিক্ষকদের। — ফাইল চিত্র
ইংরেজি হরফে লেখা হিন্দি সিনেমার গান। কোথাও আবার প্রেমপত্র। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট আইন কলেজের দ্বিতীয় ও চতুর্থ সেমেস্টারের একাংশ পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র দেখতে গিয়ে হোঁচট খান গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের। অনেকে আবার পরীক্ষাকেন্দ্রে অধ্যাপকদের ভুমিকা ছবি এঁকে ফুটিয়ে তুলেছিলেন উত্তরপত্রে। পরীক্ষায় স্বাভাবিক ভাবেই তাঁরা ফাস করেননি। কিন্তু পাশ করিয়ে দিতে হবে বলে শুক্রবার ওই ছাত্রছাত্রীরা কলেজে বিক্ষোভ দেখানোয় নিন্দার ঝড় উঠেছে শিক্ষামহলে।
শাসক দলও ওই ছাত্রছাত্রীদের সম্পর্কে কড়া মনোভাব নিয়েছে। সাংসদ অর্পিতা ঘোষ সরাসরিই সে কথা বলে দিয়েছেন। এ দিন বালুরঘাটে আয়োজিত উত্তরবঙ্গ উৎসবের উদ্বোধন করে অর্পিতা মঞ্চ থেকে নামতে টিএমসিপির জেলা সভাপতি অতনু রায় আইন কলেজে অকৃতকার্য পড়ুয়াদের বিষয়টি দেখার জন্য আবেদন করেন। সেই সময় অর্পিতা প্রকাশ্যে অতনুকে বলেন, ‘‘উত্তর লিখে যাঁরা কৃতকার্য হয়েছেন খাতা রিভিউ করে দেখার সুযোগ তাঁদের রয়েছে। আর যাঁরা পড়াশোনা না করে ফেল করে পাশ করানোর দাবিতে আন্দোলনের নামে কলেজের পরিবেশ নষ্ট করছে, ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাঁদের ধর্ণা আন্দোলন তুলে দেওয়া হবে।’’ অতনুকেও তিনি ওই পড়ুয়াদের পক্ষ না নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
পরীক্ষার্থীদের এমন আচারণে চরম ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যে সমস্ত পড়ুয়া উত্তরপত্রে এমন অভব্য আচারণ করেছে, তাঁদের প্রতি কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওই কলেজের প্রশাসক তথা পরীক্ষাসমূহের নিয়ামক সনাতন দাসও। তিনি বলেন, ‘‘প্রয়োজনে অভিযুক্ত পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন বাতিলও করা হতে পারে।’’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বালুরঘাট আইন কলেজের দ্বিতীয় ও চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সেই পরীক্ষায় প্রায় ৪০ শতাংশ পরীক্ষার্থী উত্তরপত্র দেখে হতবাক অধ্যাপকেরা। উত্তরপত্রে হিন্দি সিনেমার গান থেকে শুরু করে গালিগালাজও লেখা রয়েছে উত্তরপত্রে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় স্তরেও আইন বিষয়ের পঠন পাঠন শুরু হয়েছে। যার জন্য কলেজের পরীক্ষার খাতা এ বারে দেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা বলেন, বছরখানেক ধরে বালুরঘাট ল কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। অধ্যাপকদের নজরদারিতে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। ফলে টুকলি করার সুযোগ না পেয়ে হতাশা থেকে উত্তরপত্রে এমন লিখে থাকতে পারে বলে দাবি অধ্যাপকদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy