নির্জন: লকডাউনে শুনশান কোচবিহার শহরের একটি রাস্তা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
টানা দু’মাস ‘গ্রিন জ়োনে’র তকমা ধরে রাখা কোচবিহারে এ বার হাজারের ঘরে পৌঁছল কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। বৃহস্পতিবার কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান জানান, নতুন করে আরও ৩৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সব মিলয়ে এ দিন বিকেল পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০২১ জন। এঁদের মধ্যে অবশ্য ৭৫১ জন ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। বাকিদের চিকিৎসা চলছে।
গত দু’সপ্তাহ ধরে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে সংক্রমণ। তার মধ্যে গত এক সপ্তাহেই কোচবিহার জেলায় ৩৮৭ জনের লালারসের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। যার একটি বড় অংশ কোচবিহার সদর মহকুমার। অবশ্য এই সময়ের মধ্যে ২২১ জন সুস্থও হয়ে উঠেছেন। কোচবিহার জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “আক্রান্তের সঙ্গে সুস্থতার হারও লাফিয়ে বাড়ছে। আক্রান্তে কিছুটা রাশ টানা গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আসতে সময় লাগবে না।”
আক্রান্তের সংখ্যা কীভাবে হ্রাস করানো যায়, তা নিয়েই এখন উদ্বিগ্ন কোচবিহার জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। গত কয়েক মাস ধরে টানা লকডাউন চলছে। লকডাউনের প্রথম দু’মাস কোচবিহার পুরোপুরি ‘গ্রিন জ়োন’ ছিল। জুন মাসের শেষের দিকে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ঘরে ফিরতে শুরু করেন। সেই সময়েই আক্রান্ত-সংখ্যা বাড়তে শুরু করে জেলায়। ধীরে ধীরে সেই সংখ্যা ৩০০ জনের বেশিতে গিয়ে দাঁড়ায়। তার পরে সেই সংখ্যা আবার কমতে শুরু করে।
এমনকি, জুলাই মাসের একটা সময় আক্রান্ত ও সুস্থের সংখ্যা প্রায় সমান হয়ে যেতে বসেছিল। তার দিনকয়েকের মধ্যে ফের আক্রান্ত বাড়তে শুরু করে। সেই সময় শুধু ভিনরাজ্য ফেরত বাসিন্দারা নন, স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। কী ভাবে এই সংক্রমণ ছড়াল তা নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। সময়মতো লকডাউন এবং পরীক্ষার মাধ্যমে আক্রান্তকে চিহ্নিত করার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা হওয়াতেই ওই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। পরে পরীক্ষার হার বাড়ানো ও চিহ্নিতকরণ শুরু হলেও তা অনেকটা দেরি হয়েছে বলে অভিযোগ।
এই অবস্থায় প্রশাসন রাজ্য সরকারের ঘোষিত লকডাউনের বাইরে স্থানীয় ভাবেও ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। বেশি আক্রান্ত এলাকায় পূর্ণ লকডাউন করা হচ্ছে দফায় দফায়। তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। দীর্ঘসময় পূর্ণ লকডাউনে হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। আগামী দিনে কী করে সংসার চলবে তা নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের একটি অংশ। এই সময়ে আংশিক লকডাউন নিয়েও সরব অনেকে।
ফোসিনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “আমরা প্রশাসন ও সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছিলাম যাতে স্থানীয় ভাবে লকডাউন না করা হয়। রাজ্য সরকারের ঘোষিত দিন এবং কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবেই সব রাখার আবেদন জানানো হয়। সেই আর্জি মুখ্যমন্ত্রী মেনেছেন। মানুষের আয় বন্ধ না করেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে রোগের সঙ্গে লড়াই করতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy