Advertisement
১১ মে ২০২৪
Ambulance

অ্যাম্বুল্যান্স কম, নেই কন্ট্রোল রুম

শিলিগুড়ি মহকুমা এলাকায় করোনার সঙ্গে লড়ার পরিকাঠামোর অভাব নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২০ ০৪:৫৬
Share: Save:

ক’দিন আগের ঘটনা। বিকেলের পর মাটিগাড়ার কোভিড হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন এক বৃদ্ধা। ছেলে থাকে শহরের বাইরে। বাড়ি ফেরার জন্য কোনও সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স বা গাড়ি পাচ্ছিলেন না তিনি। বৃদ্ধার ছেলেও চেষ্টা করে অ্যাম্বু ল্যান্স জোগাড় করতে পারেননি। কোনও সরকারি কন্ট্রোল রুমের নম্বরও মেলেনি। শেষে, একটি সংস্থার সাহায্যে টোটোয় মাকে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করেন ছেলে।

শক্তিগড়ের বাসিন্দা এক যুবক হোটেল কোয়রান্টিনে ছিলেন। তার মধ্যে এক দিন সকালে স্বাস্থ্য দফতর থেকে ফোন করে জানানো হয় যে তাঁর করোনা পজ়়িটিভ হয়েছে। তাঁকে অপেক্ষা করতে বলে। সেদিন কোভিড হাসপাতালে পৌঁছতে তাঁর সন্ধে হয়ে গিয়েছিল। ততক্ষণ হোটেলে দরজা বন্ধ করে তাঁকে আলাদা রাখা হয়েছিল। ভোগান্তির অভিজ্ঞতা রয়েছে চম্পাসারির এক বাসিন্দারও। সর্দি-কাশি হওয়ায় টেস্টের কথা ভাবছিলেন তিনি। ততদিনে ওই এলাকায় একাধিক বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। কোথায় কী ভাবে, কখন পরীক্ষা করতে যাবেন বুঝতে পারছিলেন না ওই বাসিন্দা। শেষে, এক বন্ধুর সঙ্গে মেডিক্যালে গিয়ে বিস্তর ঘোরাঘুরি করে পরীক্ষা করান।

শিলিগুড়ি মহকুমা এলাকায় করোনার সঙ্গে লড়ার পরিকাঠামোর অভাব নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি বিভিন্ন প্রশাসনিক বৈঠকে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গত সপ্তাহেই একটি সরকারি বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। শিলিগুড়ি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের সদস্যরা রাস্তায় শারীরিক দূরত্ব মেনে প্ল্যাকার্ড হাতে ক্ষোভও দেখিয়েছেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘পরিকাঠামোর দিকটি আমরা সাধ্যমত ব্যবস্থা করছি। সরকারের কাছে জানানো হয়েছে।’’

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সবচেয়ে বেশি সমস্যা রয়েছে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে। শিলিগুড়ি মহকুমার বাসিন্দার সংখ্যা ১০ লক্ষের উপর। সেখানে করোনার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে ৩টি অ্যাম্বুল্যান্স। তারমধ্যে দু’টি শহরের জন্য, একটি গ্রামীঁণ এলাকার জন্য। রোজ একাধিক বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন, আবার সুস্থ হয়ে ছাড়াও পাচ্ছেন অনেক। শিলিগুড়ি পুরসভা এলাকা, ৩৮২টি গ্রাম, ৪৭টি চা বাগান মিলিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকায় তিনটি অ্যাম্বুল্যান্স দিয়ে পরিষেবা সামাল দেওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। কখনও করোনা রোগীকে দিনভর অপেক্ষা করতে হচ্ছে, কখনও সুস্থ ব্যক্তিকে বাড়ি ফেরার জন্য নিজেকে গাড়ি খুঁজতে হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর শিলিগুড়ির জন্য আরও ৪টি গাড়ি চাইলেও এখনও তার অনুমোদন মেলেনি।

সমস্যা রয়েছে টোল ফ্রি কন্ট্রোল রুম নিয়েও। একাধিকবার প্রশাসনিক বৈঠকে তা আলোচনা হলেও চালু হয়নি। সরকারি পরিষেবার খোঁজ, বেসরকারি হাসপাতালের খোঁজ, টেস্ট কী ভাবে হবে, অ্যাম্বুল্যান্স কী ভাবে মিলবে এমন হাজারো প্রশ্নের উত্তর সহজেই মিলতে পারে টোল ফ্রি কন্ট্রোল রুম থাকলে।

‘শিলিগুড়ি ফাইট করোনা’ মঞ্চের অন্যতম সদস্য অনিমেষ বসু জানান, ‘‘আমরা কন্ট্রোল রুম, অ্যাম্বুল্যান্সের কথা একাধিকবার বলেছি। এখনও কাজ হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ambulance Siliguri Covid 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE