Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

চারদিনে তিন গণপিটুনি

রবিবার, লক্ষ্মীপুজোর রাতে পিরোজপুরে চোর সন্দেহে। পরদিনই গৌড় রোডের বাশুলিতলায় মোবাইল চোর সন্দেহে। দু’দিনের মাথায় ফের একই ঘটনা শহরের রাস্তায়।

অমানবিক: রাস্তায় সকলের সামনে চলছে গণপ্রহার। নিজস্ব চিত্র

অমানবিক: রাস্তায় সকলের সামনে চলছে গণপ্রহার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ইংরেজবাজার শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৯ ০৮:০২
Share: Save:

গণপ্রহারের ঘটনা কি তাহলে অভ্যেসে পরিণত হয়ে পড়ল ইংরেজবাজারে। বুধবার শহরের বুকে ফের এমন ঘটনায় এই প্রশ্ন উঠে পড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

রবিবার, লক্ষ্মীপুজোর রাতে পিরোজপুরে চোর সন্দেহে। পরদিনই গৌড় রোডের বাশুলিতলায় মোবাইল চোর সন্দেহে। দু’দিনের মাথায় ফের একই ঘটনা শহরের রাস্তায়। এ দিন বিকেলে রামকৃষ্ণপল্লি এলাকার একটি সিনেমা হল সংলগ্ন ৩৪ জাতীয় সড়কের পাশে মোবাইল ও বাইক চোর সন্দেহে দুই যুবক গণপিটুনির শিকার হলেন। অভিযোগ, একদল উত্তেজিত জনতা দু’জনকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে, কখনও রাস্তায় ফেলে মারধর করে। খবর পেয়ে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ ওই দুই যুবককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। প্রহৃতদের অবশ্য দাবি, মিথ্যা অপবাদে তাঁদের গণপ্রহার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই যুবকের নাম মনোতোষ দাস ও ঝন্টু সাহা। বাড়ি তেলিপুকুর এলাকায়।

রামকৃষ্ণপল্লি সংলগ্ন ৩৪ জাতীয় সড়কের পাশে বিভিন্ন দোকান ও শপিং মল রয়েছে। রাস্তার পাশে রাখা মোটরবাইক মাঝেমধ্যেই চুরি হচ্ছে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, ফোনে কথা বলতে বলতে হেঁটে যাওয়ার সময় দ্রুতগতিতে বাইক নিয়ে এসে সেই মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় কয়েকজনের অভিযোগ থেকে জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়কের পাশে সিনেমাহলের কাছে একটি শো-রুমের পাশেই ওই দুই যুবক বাইক চুরির চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। সেই সময় আশপাশের লোকজন দেখে ফেলেন। তার পরেই গণপ্রহার। কখনও রাস্তার ধারে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে ধোলাই চলে। মাটিতে ফেলেও মারধর হয়। এলাকার একাংশ মানুষের বক্তব্য, সময়মতো পুলিশ পৌঁছে ওই দুই যুবককে উদ্ধার না করলে তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতি ভয়াবহ হত।

শহরে পরপর গণপিটুনির ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠেছে। যদিও জেলা পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, এভাবে যদি কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেয় তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। পুলিশ সুপার অলক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘এ ভাবে আইন যদি কেউ নিজের হাতে তুলে নেয় তা কোনও ভাবে বরদাস্ত করা হবে না। যদি চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনায় কাউকে সন্দেহ হলে অবশ্যই নিকটবর্তী থানায় খবর দিতে হবে। কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নেয় তবে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। পাশাপাশি শহর ও গ্রামে এ নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mob Violence Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE