আগুন জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ। চোপড়ায়।
ফের রাজনৈতিক সংঘর্ষ। ফের উত্তপ্ত উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া।
সোমবার সাতসকালেই চলল গুলি। চোপড়ার লক্ষ্মীপুরে এই ঘটনার জেরে দুই কংগ্রেস কর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। মহম্মদ হাসিব ও শাহিদ আলম নামে ওই দু’জনকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা দু’জনেই কংগ্রেস কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত। ঘটনায় এক ভিলেজ পুলিশকর্মীও জখম হয়েছেন।
স্থানীয় সুত্রের খবর, লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা ভিলেজ পুলিশকর্মী মাসুদ আলম ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে এ দিন একজনকে একটি চিঠি পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, স্থানীয় কয়েকজন তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতী তাঁকে আটক করে মারধর করে। মাসুদ বলেন, ‘‘এদিন একটি চিঠি নিয়ে যাওয়ার সময় ডাঙ্গাপাড়ায় আটক করে কয়েকজন। পুলিশকে আমি এলাকার খবর দিচ্ছি, এই অজুহাতে ওরা আমাকে মারধর শুরু করে।’’ খবর পেয়ে লক্ষ্মীপুর থেকে একদল বাসিন্দা মাসুদকে বাঁচাতে গেলে তৃণমূল-আশ্রিত ওই দুষ্কৃতীদের সঙ্গে উদ্ধারকারীদের সংঘর্ষ বাধে। চলে গুলি। জেলা পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, পুরো ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এলাকায় পুলিশ টহল দিচ্ছে।
কংগ্রেসের অভিযোগ লক্ষ্মীপুর, ডাঙ্গাপাড়া এইসব গ্রামগুলোয় তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বেছে বেছে কংগ্রেস কর্মীদের উপর হামলা করছে। অন্যদিকে, হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। চোপড়ার ব্লক কংগ্রেস সভাপতি অশোক রায় বলেন, ‘‘ভিলেজ পুলিশকে মারধর করার সময় গ্রামের একটা অংশ ছুটে গেলে তৃণমূল দুষ্কৃতীরা আমাদের সমর্থকদের উপর হামলা করে। আমাদের দলের দুই কর্মী গুলিবিদ্ধ হন।’’ অন্যদিকে, তৃণমূল নেতা তথা চোপড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আজহার আলম বলেন, ‘‘কংগ্রেস-আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এলাকায় গন্ডগোল পাকাচ্ছে। কংগ্রেস দুষ্কৃতীরাই এ দিন হামলা চালায়। এতে আমাদের দলের চারজন জখম হয়েছে।’’
এ দিনের ঘটনার প্রেক্ষিতে চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুর রহমান বলেন, ‘‘কংগ্রেসের কয়েকজন দাগী দুষ্কৃতী রয়েছে। কিন্ত পুলিশ তাদের কেন ধরছে না বুঝতে পারছি না। তাদের ধরলেই এলাকা শান্ত হয়ে যাবে।’’ তৃণমূলের এই অভিযোগের পাল্টা কংগ্রেস ব্লক সভাপতি অশোক কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্তে এলাকা উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।’’ জেলার অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার কার্তিকচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ টহল দেওয়া হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।’’
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কয়েকদিন ধরে প্রায় প্রতিদিন কোনও না কোনও গন্ডগোল লেগেই রয়েছে। রবিবারই এক বরযাত্রীর গাড়ি আটকে দুষ্কৃতীরা হেনস্থা করে। এটা নিয়ে কংগ্রেস বনাম তৃণমূলের চাপানউতোর চলেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী রহমত আলি বলেন, ‘‘এইভাবে দিনের পর দিন রাজনৈতিক সংঘর্ষে ব্যবসা-বাণিজ্য লাটে উঠেছে। এলাকার সাধারণ মানুষ ভয়ে সিটিয়ে আছেন।’’ পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করলে এলাকায় পরিস্থিতি শান্ত হবে বলে তিনি জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy