Advertisement
১১ মে ২০২৪

অনড় প্রশান্তের হাতে ‘যুদ্ধ’-এর সাত দিন

তৃণমূলের জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘‘সাতদিন পর তৃণমূল কাউন্সিলররা বোর্ড অব কাউন্সিলরের মিটিং ডেকে পুরপ্রধানকে অপসারিত করবে।’’

গঙ্গারামপুর পুরসভা।

গঙ্গারামপুর পুরসভা।

নীহার বিশ্বাস 
গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯ ০২:৪৭
Share: Save:

বুধবারও আস্থা ভোটে গেলেন না গঙ্গারামপুরের পুরপ্রধান প্রশান্ত মিত্র। এ দিন দিনভর পুরসভায় প্রশান্তের ইস্তফা এবং আস্থা ভোট নিয়ে জল্পনা চলছিল। তবে অন্যদিনের মতো এ দিন দুপুরে পুরসভায় এসে কাজ করেছেন প্রশান্ত। কিন্তু পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে কোনও মন্তব্যই করেননি বহিষ্কৃত এই নেতা। এদিকে, আগামী সাতদিন পরেই পুরসভা দখল নেওয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু করেছে তৃণমূল।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘‘সাতদিন পর তৃণমূল কাউন্সিলররা বোর্ড অব কাউন্সিলরের মিটিং ডেকে পুরপ্রধানকে অপসারিত করবে।’’ প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান তথা কাউন্সিলর অমল সরকার অবশ্য একধাপ এগিয়ে বলেন, ‘‘এখনও কাউন্সিলররা ওঁর ঘরে তালা ঝোলাননি। তাই অন্যায় ভাবে পুরপ্রধানের পদ ধরে না রেখে সম্মান থাকতে ওঁর ইস্থফা দেওয়া উচিত।’’ প্রশান্তের দাদা তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বিজেপিতে যাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এই অনাস্থা আনা হয়। সেই অনাস্থা আটকাতে পুর আইনের বিশেষ ধারা প্রয়োগ করে প্রথমে ভাইস চেয়ারম্যান অমল সরকারকে পদ থেকে সরিয়ে দেন প্রশান্ত। এতে হাতে বাড়তি সাতদিন সময় নিয়ে ঘর গোছানোর চেষ্টা শুরু করেন তিনি। কিন্তু তৃণমূল শিবির সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরকে তুলে নিয়ে কলকাতার গোপন আস্তানায় রেখে দেয়। কাজেই কাউন্সিলরদের নিজের শিবিরে টানতে না পেরে আদালতের দ্বারস্থ হন পুরপ্রধান। গত মঙ্গলবার অনাস্থায় স্থগিতাদেশ চাওয়ার সেই আবেদনও খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। তারপর আর কোনও রাস্তাই খোলা ছিল না তৃণমূলের একদা এই প্রভাবশালী নেতার কাছে। তারপর থেকেই গুঞ্জন ছড়িয়েছে, মান বাঁচাতে প্রশান্ত নিজেই ইস্তফা দেবেন। কিন্তু আস্থা ভোট করার শেষদিনেও পুরসভায় এসে কাজ করে গেলেন তিনি। কিন্তু ইস্তফা দেওয়া নিয়ে কোনও কথাই বলেননি। যা নিয়ে জল্পনা আরও তীব্র হয়েছে। প্রশান্তের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে পুরসভায় চলছে জোর আলোচনা।

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, পুরপ্রধানের হাতে আর মাত্র সাতদিন সময় রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তাঁকে আস্থা প্রমাণ করতে হবে। অথবা ইস্তফা দিতে হবে। সূত্রের খবর, প্রশান্ত এখনও হাল ছাড়তে নারাজ। এখনও তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূলের গোপন ডেরা থেকে কাউন্সিলর ভাঙিয়ে আনার। কিন্তু সেই কাজ অসম্ভব বলেই মনে করছেন তথ্যাভিজ্ঞ মহল। এ নিয়ে প্রশান্তকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

তৃণমূল সূত্রের দাবি, কলকাতা থেকে ঘর গুছিয়ে কয়েকদিনের মধ্যে জেলায় ফিরছেন কাউন্সিলররা। আগামী ১৮ জুলাইয়ের পরেই পুরসভায় কাউন্সিলররা মিটিং করে পুরপ্রধানকে অপসারিত করবেন। এটা নিয়ে অমলের বক্তব্য, ‘‘আমাদের কাউন্সিলররা নির্দিষ্ট সময় পরেই বোর্ড অব কাউন্সিলরের মিটিং ডাকবেন। তার আগে যদি পুরপ্রধান ইস্তফা দেন তাহলে তো সমস্যা মিটেই যাবে।’’ এখন এই পরিস্থিতিতে প্রশান্ত কী পদক্ষেপ করেন, সেইদিকেই তাকিয়ে সব মহল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Prashanta Mitra Gangaram Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE