পুত্রশোক: সুব্রতকে ধরে বৃদ্ধা মায়ের কান্না। রায়গঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
দুষ্কৃতীদের হামলার আট দিনের মাথায় মারা গেলেন রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জের বাসিন্দা জখম তৃণমূল নেতা সুব্রত ঘোষ (৫০)। সোমবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে সুভাষগঞ্জে দুষ্কৃতীরা সুব্রতের উপর হামলা চালায়। গত শুক্রবার ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত অলোক বিশ্বাসকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি এখন পুলিশ হেফাজতে।
সুব্রতের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই এ দিন সুভাষগঞ্জ এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও তাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের দাবিতে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে এলাকায় গোলমাল রুখতে এবং আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে বিরাট পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এ দিন বিকেলে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের মর্গে সুব্রতের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘সুব্রতবাবুর উপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এক অভিযুক্তকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি দুই অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে। দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’’
পেশায় ঠিকাদার সুব্রত রায়গঞ্জ ব্লকের মাড়াইকুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি পদে ছিলেন। সুব্রতের স্ত্রী সীমা গৃহবধূ। তাঁদের দুই ছেলে। বড় ছেলে স্বর্ণজিৎ শিলিগুড়িতে একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। ছোট ছেলে স্বর্ণেন্দু রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ মহাবিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্র। ঘটনার দিন রাতে তিনি রায়গঞ্জ শহর থেকে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। সুভাষগঞ্জের ভিএনসি মোড় এলাকার রাস্তায় কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁকে বেধড়ক মারধর করে। ভারী কিছু দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। পরদিন সুব্রতের পরিবার সুভাষগঞ্জ এলাকার তিন যুবকের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করে। তাদের গ্রেফতারের দাবিতে ওই দিন সুভাষগঞ্জ এলাকার শতাধিক বাসিন্দা ভিএনসিমোড় এলাকায় পথ অবরোধ করেন।
গত শুক্রবার ইটাহার থানার বৈদড়া এলাকা থেকে সুভাষগঞ্জের বাসিন্দা অলোক বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পেশায় ঠিকাদার অলোক পঞ্চায়েত ভোটে মাড়াইকুড়া পঞ্চায়েতের সুভাষগঞ্জের দক্ষিণপাড় বুথ থেকে তৃণমূলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। পরদিন রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালত অলোককে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
ওই দিনই সুব্রতকে শিলিগুড়ির নার্সিংহোম থেকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে এনে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করায় পরিবার। সুব্রতের শ্যালক সুব্রত দত্তের দাবি, বাকি দুই অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy