কাছাকাছি: কীর্তনের আসরে মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র
জনসংযোগে বাদ থাকছে না কীর্তনের আসরও। মঙ্গলবার রাতে কোচবিহারের পানিশালা এলাকার একটি কীর্তনের অনুষ্ঠানে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা নাটাবাড়ি বিধানসভা এলাকার ওই গ্রামে শীতের মরসুমে কীর্তনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানেই আচমকা হাজির হন মন্ত্রী। উপস্থিত বাসিন্দাদের এক জন মন্ত্রীর কপালে ‘তিলক’ পরিয়ে দেন। মন্ত্রী সেখানে উপস্থিত অন্য ‘ভক্তদের’ ভিড়ে মিশে বেশ কিছুক্ষণ কীর্তন শোনেন। অন্য ভক্তদের মতো উপস্থিত বাসিন্দাদের অনেকের সঙ্গে ‘আলিঙ্গন’ করেন। সেখানে বাতাসাও বিলিয়েছেন তিনি। রবীন্দ্রনাথ বলছেন, “সামাজিক সমস্ত অনুষ্ঠানেই যাই। সুযোগ পেলে কীর্তনের অনুষ্ঠানেও আমার যাতায়াত নতুন নয়। এক সময় ডাউয়াগুড়িতে আমাদের বাড়িতে কীর্তনের অনুষ্ঠান হত।”
বিরোধীদের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, গত লোকসভা ভোটে কোচবিহার-সহ গোটা উত্তরবঙ্গে গেরুয়া ঝড় তৃণমূল শিবিরের চিন্তা বাড়িয়েছে। সেই কারণে জনসংযোগ বাড়াতে রাজ্য জুড়েই তৃণমূলের নেতারা নানা কর্মসূচি নিচ্ছেন। ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের ‘পরামর্শ’ও নেওয়া হচ্ছে। জনসংযোগ বাড়াতে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিও চলছে। তার পরেও আগামী বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে রাজ্যের শাসক দলের নেতা, মন্ত্রীদের উদ্বেগ কাটছে না। তাই মন্ত্রীকে কীর্তনের অনুষ্ঠানেও যেতে হচ্ছে।
বিজেপির কোচবিহার জেলা সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “মানুষ তৃণমূলের পাশে নেই। তাই এখন ওদের নেতা, মন্ত্রীদের কীর্তনের অনুষ্ঠানে দেখা যাচ্ছে। সবটাই আসলে মোদীর প্রতি মানুষের আস্থা দেখে উদ্বেগের জের। তবে ওঁরা যাই করুন না কেন বিধানসভা ভোটে মানুষ আমাদের সমর্থন করবেন।”
আরও পড়ুন: সাগর থেকে নদ-নদী, মকর স্নানে পুণ্য সঞ্চয়ে ঢল
তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য ওই বক্তব্য মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, লোকসভার ভোটের আবহ ফিকে হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের তিনটি বিধানসভা ভোটের উপনির্বাচনে তিনটিতেই বিজেপিকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। ঝাড়খণ্ডের সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনেও মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখান করেছেন। নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মানুষের ক্ষোভ আরও বেড়েছে। রবীন্দ্রনাথ বলেন, “বিজেপি সব কিছুতেই রাজনীতি দেখে। ওরা ভণ্ড সাধু । আমরা মানুষের পাশে থাকি, মানুষ যেখানে থাকেন সেখানে যাই।” তাঁর সংযোজন, ‘‘মানুষের বিপদের সময়েও শশ্মান হোক কিংবা কবর স্থান, সেখানেও আমাদের লোকেরাই যান।’’
প্রসঙ্গত,মন্ত্রীর নিজের নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রেও বিজেপি লোকসভা ভোটে ‘লিড’ দিয়েছিল। ভোটের ফল ঘোষণার পর একাধিক গ্রামে ঢুকতে বাধার মুখে পড়তে হয় তৃণমূল নেতাদের অনেককেই। তৃণমূলের দাবি, রবীন্দ্রনাথ মাটি কামড়ে থেকে নাটাবাড়ি বিধানসভায় সেই ছবি অনেকটাই বদলেছেন। দলের এক নেতার কথায়, “সব মিলিয়ে জনসংযোগে খামতি রাখা হচ্ছে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy