বিরোধ: উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ঘটনার প্রতিবাদে আলিপুরদুয়ারের রাস্তায় মিছিল। শনিবার। ছবি: নারায়ণ দে
উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ঘটনাকে সামনে রেখে বিজেপিকে কোণঠাসা করতে উত্তরের জেলাগুলোতেও কোমর বেঁধে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ল তৃণমূল। শনিবার আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলার বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ করলেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। সেইসঙ্গে দুই জেলার নেতারাই সাফ জানিয়ে দিলেন, একদিনেই তাঁদের এই প্রতিবাদ শেষ হচ্ছে না। যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে নৃশংস এই ঘটনাকে সামনে রেখে আগামী দিনেও দুই জেলায় বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে।
এই দিনই দলীয় কিছু সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দলের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেন কোচবিহারের বর্ষীয়ান তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। তাঁর এই ঘোষণায় কিছুটা হলেও কোচবিহারে দল অস্বস্তিতে পড়েছে। অন্যদিকে মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষও এ দিন আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। সব মিলিয়ে সংগঠনের এই আচমকা বেসামাল অবস্থার মধ্যেই এ দিনের এই হাথরস প্রতিবাদে পথে নামতে হয়েছে জেলা নেতৃত্বকে। তাই পথের মিছিলে যাতে ঐক্যের ছবিটা যাতে ঠিকঠাক থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখাও জরুরি ছিল। তাই শুধু কোচবিহারে নয়। দুই জেলাতেই নিজেদের ঐক্য তুলে ধরারও চেষ্টা করেছেন দলের নেতারা। এ দিন কুমারগ্রাম ও আলিপুরদুয়ার শহরে যে ছবি দেখা গিয়েছে, কোচবিহারের বিভিন্ন জায়গাতেও ঐক্যের সেই প্রচেষ্টাই চোখে পড়েছে।
এ দিন কলকাতায় রাস্তায় নেমেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ব্লকে ব্লকে মিছিল করতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজ্যের তরফে এই নির্দেশ আসর পর শনিবার সকাল থেকেই দুই জেলার বিভিন্ন জায়গায় রাস্তায় নেমে তৃণমূলের প্রতিবাদ শুরু হয়ে যায়।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রথমে কৃষি বিলের সংস্কার ও তারপর হাথরসের ঘটনাকে সামনে রেখে বিজেপিকে যতটা সম্ভব তাঁরা যে কোণঠাসা করতে মরিয়া, এ দিন প্রতিবাদ মিছিল শুরুর আগে সাংবাদিক বৈঠকে তা বুঝিয়ে দেন দুই জেলার তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা।
তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, “উত্তর প্রদেশের হাথরসের নৃশংস ঘটনা কোনও অবস্থাতেই মানা যায় না। এই ঘটনা থেকেই পরিষ্কার, বিজেপি শাসিত কোনও রাজ্যেই আইন-শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। বিজেপি ক্ষমতায় এলে বাংলার অবস্থাও এমনই হবে। এখানেও মহিলাদের নিরাপত্তা বলে কিছু থাকবে না। ওই ঘটনার প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন জারি থাকবে।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “উত্তরপ্রদেশ-সহ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে পরপর দলিত, তফসিলি ও মহিলাদের উপর যে অত্যাচার হচ্ছে তা লজ্জাজনক।” বিধায়ক অর্ঘ্য রায় প্রধান বলেন, “যে কোন ধর্ষণের ঘটনাই নিন্দনীয় ও শাস্তিযোগ্য হওয়া উচিত। সেই শাস্তির জায়গাটা বাংলায় আছে, বাংলার বাইরে নেই।”
ব্লক সভাপতি সন্তোষ বর্মণের মৃত্যুর জেরে ফালাকাটা বাদে আলিপুরদুয়ার জেলার সব ব্লকেই এ দিন প্রতিবাদ মিছিল করে তৃণমূল। কোচবিহার জেলার বিভিন্ন এলাকাতেও মিছিল ও পথসভা করেছেন তৃণমূল কর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy