Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পঞ্চমী যেন অষ্টমী

একে যানজটে থমকে যায় শহরের বিভিন্ন রাস্তা, তায় সঙ্গী লোডশেডিং। দু’য়ের ছোবলে পঞ্চমীর সন্ধ্যা থেকে জেরবার হতে হয়েছে শিলিগুড়িবাসীকে।

শিলিগুড়ির দেশবন্ধুপাড়ার সুব্রত সঙ্ঘে ভিড়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

শিলিগুড়ির দেশবন্ধুপাড়ার সুব্রত সঙ্ঘে ভিড়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৩৫
Share: Save:

একে যানজটে থমকে যায় শহরের বিভিন্ন রাস্তা, তায় সঙ্গী লোডশেডিং। দু’য়ের ছোবলে পঞ্চমীর সন্ধ্যা থেকে জেরবার হতে হয়েছে শিলিগুড়িবাসীকে।

পুজো মণ্ডপের লাইনে দাঁড়িয়ে পঞ্চমীর রাত নাকি অষ্টমীর সন্ধ্যা, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে যায় শিলিগুড়ির দেশবন্ধু পাড়ায়। লম্বা লাইন মণ্ডপ থেকে বের হয়ে রাস্তা ছুঁয়েছে। মণ্ডপের সামনে দর্শনার্থীদের ভিড় হলেও রাস্তা জুড়ে গাড়ির লাইন। পঞ্চমীতে শিলিগুড়ির রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়নি, ছোট বড় গাড়ি, টোটো বাইক সবই মণ্ডপের কাছাকাছি চলে যায় তাতেই যানজট শুরু হয় বলে পুলিশের দাবি। পুজো উদ্যোক্তাদের একাংশের অভিযোগ, এ দিন যান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা যেমন ছিল না, তেমনই সন্ধ্যের পরে ট্র্যাফিক সামলানোর জন্য পুলিশকর্মীদেরও বিগ বাজেটের পুজোগুলির আশেপাশে দেখা যায়নি। তার জেরেই বোধনের আগে ঠাকুর দেখতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে বাসিন্দাদের, একই সঙ্গে নাকাল হতে হয়েছে নিত্যযাত্রীদেরও।

সন্ধ্যার পরে লোডশেডিংও হয়েছে শহরের বেশ কিছু এলাকায়। হাকিমপাড়া, চম্পাসারিতে কয়েক দফায় লোডশেডিং হয়েছে। কিছু মণ্ডপে লোডশেডিঙের জেরে পুজোর উদ্বোধন অনুষ্ঠানও থমকে গিয়েছে। অন্ধকারে ভিড় রাস্তায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিদ্যুৎ পর্ষদের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, অনেক পুজো মণ্ডপে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ চলেছে এ দিন। সে কারণে ‘লোড’ বিগড়ে গিয়ে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়েছিল, লোডশেডিং হয়নি বলে পর্ষদের দাবি। যদিও পুজো উদ্যোক্তারা বিভ্রাটের কারণ হিসেবে পর্ষদেকর গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন।

এ দিন বিকেল থেকেই দর্শনার্থীদের ঢল নামে বিভিন্ন রাস্তায়। হিলকার্ট রোড-সেবক রোড-বর্ধমান রোডে পুজোর বাজারের জন্য গত কয়েকদিন ধরেই যানজট চলেছিল। তবে এ দিন সন্ধ্যা থেকে যানজটে পাল্লা দিয়েছে দেশবন্ধুপাড়া, নবগ্রাম, অম্বিকানগর, রাজা রামমোহন রায় রোড, সুভাষপল্লির রাস্তায় যানজট শুরু হয়ে যায়। এই সব রাস্তাগুলি দিয়ে বিভিন্ন বিগবাজেটের পুজো মণ্ডপে যাতায়াত করতে হয়। রাত আটটা নাগাদ জট-পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে সুভাষপল্লি, রাজা রামমোহন রায় রোড, দেশবন্ধুপাড়ায় যানচলাচল থমকে যায়। শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যও জটে আটকে পড়েন। হিলকার্ট রোডের পার্টি অফিস থেকে সুভাষপল্লির বাড়িতে পৌঁছতেই ঘণ্টাখানেকের বেশি লেগে যায় মেয়রের। অশোবাবুর দাবি, শহরে যথাযথ যান নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। মেয়র অভিযোগ করে বলেন, ‘‘পুর এলাকায় এতগুলি বিগবাজেটের পুজো হচ্ছে, অথচ পুলিশ আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগই রাখে না। যার ফল ভুগতে হচ্ছে শহরবাসীদের।’’

যদিও, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা জানান, পঞ্চমীর দিন বহু পুজোর শিলিগুড়িতে উদ্বোধন হয়েছে। তাই সন্ধ্যার পর ভিড় হয়েছে। আগামী দিনগুলিতে যান নিয়ন্ত্রণের কথা ভেবে গাড়ি, বাইকে অনেকেই পরিবার নিয়ে পুজো দেখেছেন। সমস্ত কিছুই ট্রাফিকের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।

বৃহস্পতিবার ছিল রাজ্য সরকারি ছুটি। প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা রবীন্দ্র সঙ্ঘের পুজোর উদ্যোক্তা তপন দত্তের কথায়, ‘‘এ বার পঞ্চমীতেই যা লোক রাস্তায় নেমেছেন, তাতে তো বাকি দিনগুলি কী হবে কে জানে!’’ পঞ্চমীর সন্ধ্যা তাই বাকিদিনগুলিতে রাস্তার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগেই রাখল শহরবাসীকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchami crowd Pandals
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE