প্রতীকী ছবি
গরুর গায়ে লেখা থাকত সাংকেতিক চিহ্ন। সেই চিহ্নযুক্ত গরুর পাল এগিয়ে যেত সীমান্তের দিকে। যাওয়ার সময় মাড়িয়ে নষ্ট করে দিয়ে যেত বিঘের পর বিঘে জমির ধান। এ বারে এখনও এমন গরুর পাল বিরল। তা হলে কি গরু পাচার বন্ধ হয়ে গেল? তুফানগঞ্জ, মেখলিগঞ্জের বেশ কিছু এলাকা থেকে বাসিন্দারা বলছেন, মোটেও না। লকডাউনের জন্য পাচার কমে গিয়েছিল। কিন্তু আনলক হতেই তা বাড়তে শুরু করেছে।
জেলার সীমান্তবর্তী কিছু এলাকা নদীর ফলে বিচ্ছিন্ন। কিছু এলাকায় এখনও সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নেই। দিনহাটা ১ ব্লকের গীতালদহের শ্রীলঙ্কা, জারিধরলা, দরিবস, মরাকুঠি, বড়াইবাড়ি ছাড়াও দিনহাটা ২ ব্লকের শুকারুরকুঠি এলাকায় কাঁটাতার নেই। এই সব জায়গায় বয়ে চলেছে ধরলা নদী। গীতালদহ-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মনসুর আলি বলেন “আগে রোজই পালে পালে গরু পাচার হত। এত গরুতে বিঘের পর বিঘের ধান নষ্ট হত। পাচার কমে যাওয়ায় এ বার কিন্তু তেমনটা হয়নি।” সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া বলেন, “সীমান্তের ফাঁকা থাকা এলাকা দিয়ে গরু পাচারের সম্ভাবনা আছে। বিএসএফ নজরদারি আরও বাড়ালে পাচার আরও কমবে।’’ দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “পাচার রোধে সীমান্তে বিএসএফের আরও কড়াকড়ি দরকার।”
পাচারের রমরমার অভিযোগ ছিল মেখলিগঞ্জ, তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়েও। চ্যাংরাবান্ধা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ধরলা নদী, নিজতরফ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ৭২ নিজতরফ ও কুচলিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ২৫ তিস্তা পয়েস্তি এলাকায় তিস্তার জন্য সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নেই। তুফানগঞ্জের বালাভূত সীমান্তেও কিছু এলাকা উন্মুক্ত। অভিযোগ, ওই সীমান্তকে কাজে লাগিয়েই আগের থেকে কম হলেও গরু পাচার হচ্ছে। বর্ষায় নদীতে ভাসিয়ে দিয়েও গরু নিয়ে যাওয়া হয়। মেখলিগঞ্জে মাঝেমধ্যেই পুলিশ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে যেমন গরু ধরা পড়ছে, তেমনি গ্রামবাসীরাও পাচারের জন্য নিয়ে যাওয়া গরু আটকে রাখছে। জেলা পুলিশের ডিএসপি চন্দন দাস বলেন, “পুলিশ সুপারের নির্দেশে সর্বত্র কড়া নজরদারি রয়েছে। কয়েক মাসে নানা এলাকা গরু উদ্ধারও করা হয়েছে।” বিএসএফের এক আধিকারিকও বলেন, ‘‘গরু পাচারের প্রবণতা কমেছে। সবসময়েই সতর্ক নজরও রাখা হচ্ছে।’’
(তথ্য সহায়তা: সুমন মণ্ডল, সজল দে, সঞ্জীব সরকার)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy